চাকরির বাজারে অভিজ্ঞতার কদর সবচেয়ে বেশি -মোহাম্মদ মহসিন,ভাইস চেয়ারম্যান- পিএইচপি ফ্যামিলি
পিএইচপি ফ্যামিলি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ । মোহাম্মদ মহসিন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান ।প্রতিষ্ঠানটির ২০ বছরের অগ্রযাত্রায় তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। দীর্ঘদিনের কর্মযজ্ঞে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। এছাড়াও দেশে প্রথমবারের মতো গাড়ি নির্মাণ হচ্ছে তার হাত ধরেই।
মোহাম্মদ মহসিন মনে করেন -অল্পতেই হতাশ হওয়া যাবে না। তরুণদের পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারি করতে হবে। অনেকেই মনে করেন বড় ডিগ্রি থাকলেই চাকরি পাওয়া সহজ। যদিও আমার কাছে এমনটি মনে হয় না। এখানে সমান তালে অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন আছে। চাকরির বাজারে অভিজ্ঞতার কদর সবচেয়ে বেশি।
আমরা স্বপ্ন দেখি আমাদের একজন পিয়ন নিজস্ব গাড়ি চড়ে অফিস করবে। তার মানে আমাদের সবার জীবনযাত্রার মান এমন পর্যায়ে নিতে হবে, যেখানে একজন পিয়নও গাড়ির মালিক হবে। এই স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমাদের ভবিষ্যতে একটি বেসিক স্টিল ইন্ডাস্ট্রি করার স্বপ্ন আছে। মিরসরাইতে আমরা অলরেডি জায়গা নিয়েছি।
মোহাম্মদ মহসিন বলেন -করপোরেট সেক্টরকে যদি যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ভাবি, তাহলে কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবাই সৈনিক। মানে যারা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেয় তারাই হলো আমার কর্মী। এটা যদি আমাদের মাথায় থাকে, তাহলে কিভাবে তাদের বঞ্চিত করবো? যদিও আমরা লকডাউনের শুরুতে খরচ কমিয়ে দিয়েছিলাম। তখন একটা স্লোগান চালু করেছিলাম, ‘কম কম খাবো কিন্তু সবাই মিলে খাবো’। আমি শ্রমিকদের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলাম। আমরা ওদেরকে বুঝিয়েছি, খরচ কমাতে হবে কিন্তু আমরা ফ্যাক্টরি বন্ধ করিনি। ওরাও পুরো উদ্যমে কাজ করেছে। ফলে যে মুনাফাটা হলও, সেটা বোনাস হিসেবে শ্রমিকদের দিয়েছি। আসলে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই আমাদের এই পর্যায়ে পৌঁছানো এবং টিকে থাকা।
মোহাম্মদ মহসিন বলেন -দেশের মাটিতে গাড়ি উৎপাদন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রথম প্রথম অনেক কিছুই বুঝতে পারিনি। অনেক কিছুই নতুন করে জানতে হয়েছে। কসরত করতে হয়েছে। তবে সব বাঁধা পেরিয়ে আমরা সফলতার মুখ দেখছি। বিশেষ করে এবারের বাজেটে দেশীয় গাড়ি নির্মাতাদের জন্য বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে সরকার, যা এ শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
যদি চ্যালেঞ্জই না থাকে তাহলে সেখানে কোনও মজাই থাকে না। আবার যদি কোথাও ঝুঁকি না থাকে তাহলে সেখানে কোনও রোমাঞ্চও আসবে না। সঙ্গত কারণেই আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আনন্দ পাই। অনেকসময় দেখা যায় একটা কাজ আজকে করতে সহজ হলেও ১০ বছর পরে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য চিন্তাভাবনা করে কাজ করার চেষ্টা করি। সবসময় আমরা নিজেদের দোষ ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। এবং সেগুলো দ্রুত সমাধান করি।
কয়েক বছর আগে পিএইচপি পরিচালিত ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ঢাকায় আসেন মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। অনুষ্ঠান শেষে তিনি কথা বলেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সঙ্গে। খোঁজ নিলেন ব্যবসা-বাণিজ্যের। মাহাথির মোহাম্মদ তখন মালয়েশিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি প্রোটনের চেয়ারম্যান। মালয়েশিয়ায় নিয়ে গিয়ে পিএইচপি পরিবারের সদস্যদের নিজের গাড়ির কারখানা ঘুরিয়ে দেখান মাহাথির। পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রোটনের গাড়ি কারখানা নির্মাণের প্রস্তাব দেন তিনি। তার অভয় পেয়েই ২০১৫ সালে বিনিয়োগ শুরু করে পিএইচপি। এভাবেই দেশে সেডান গাড়ি সংযোজন শুরু হয় পিএইচপির হাত ধরে। এরপর আমরা একে একে সাশ্রয়ী মূল্যে এই দেশেই গাড়ি তৈরি করতে সক্ষম ও সফল হয়েছি।