যেসকল অভিযোগে চাকুরী হতে অপসারণ করা হয়েছে শরিফ উদ্দিনকে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কক্সবাজার সহ সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সাবেক বহুল আলোচিত উপ সহকারী পরিচালক মোঃ শরীফ উদ্দিন-কে তার চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ৭৪৯০ নম্বর স্মারকে জারীকৃত দুদক এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে “দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৫৪(২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মোঃ শরীফ উদ্দিন উপ সহকারী পরিচালক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালী-কে চাকরি হতে অপসারণ করা হলো। অপসারিত শরীফ উদ্দিন বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন।” এ অপসারণ ১৬ ফেব্রুয়ারী হতে কার্যকর হবে।
কক্সবাজারের বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ সহকারী পরিচালক মোঃ শরীফ উদ্দিন-কে কক্সবাজার সহ চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় হতে কিছুদিন আগে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বদলী করা হয়।
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফ উদ্দিনকে নিম্নলিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাকুরী হতে অপসারণ করা হয়েছে।
আদালতের অনুমোদন ব্যতীত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড কক্সবাজার শাখার একটি ব্যাংক একাউন্টের লেনদেন স্থগিত করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতে প্রমান হওয়ায় তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের বিষয়টি ধরা পড়ে।
কক্সবাজার জেলায় RAB কর্তৃক পরিচালিত অপারেশনে জব্দকৃত ৯৩,৬০,১৫০ টাকার চালান রাষ্ট্রীয় কোষাগার অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখেন। পরবর্তীতে বিষয়টি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দুদকের ভাবমুর্তী ক্ষুন্ন হয়।
চট্টগ্রাম জেলা হতে পটুয়াখালী জেলায় বদলির আদেশ হওয়ার পর বদলির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রীট দায়ের এবং নির্ধারিত সময়ের এক মাস পরে যোগদানপত্র ই-মেইলে প্রেরণ এবং পরবর্তী এক মাস পরে স্ব-শরীরে নতুন কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া।
পুরাতন কর্মস্থলের নথিপত্র হস্তান্তর না করে নতুন কর্মস্থলে যোগদান এবং তৎপরবর্তী আড়াই মাস পরে নথিপত্র হস্তান্তর করা।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার পৃথক ৬ জন ব্যক্তি কর্তৃক উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, চাঁদাবাজি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির অভিযোগ দাখিল করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা২০০৮ এর ৫৪(২) ধারায় প্রদত্ব ক্ষমতা বলে কমিশন শরিফ উদ্দীনকে চাকুরীচ্যুত করে। ৫৪(২) ধারায় বলা আছে, ” কমিশন কোন প্রকার কারন ব্যাতিরেখে ৯০ দিনের নোটিশে কিংবা ০৩ মাসের বেতন ভাতাদি পরিশোধ পূর্বক যেকোন কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করতে পারবে”।
দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা ২০০৮ এর ৫৪(২) ধারা বাতিল চেয়ে দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীগন ১৭-০২-২০২২ তারিখ আন্দোলন ও মানববন্ধন করেছে। পরবর্তীতে দুদক সচিবের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মকর্তা- কর্মচারীগন আন্দোলন ঐদিনের মতো শেষ করে।