শিরোনাম

South east bank ad

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সাংসদ–মেয়র সম্পর্কে বরফ গলার ইঙ্গিত

 প্রকাশ: ২৪ মে ২০২১, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন   |   মেয়র

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সাংসদ–মেয়র সম্পর্কে বরফ গলার ইঙ্গিত


ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্থানীয় সাংসদ ও পৌরসভার মেয়রের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌঁছেছিল। সেই বিরোধের বরফ গলতে শুরু করেছে। গতকাল রোববার সাংসদ-মেয়রের ‘রণে ভঙ্গ’ অনুষ্ঠান ছিল। শেষ পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠান স্থগিত হলেও দুজন একসঙ্গে বসে সময় কাটিয়েছেন।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গতকাল গৌরীপুর পৌরসভার উদ্যোগে পৌর মিলনায়তনে ‘করোনা প্রতিরোধে গৌরীপুর পৌরসভার ভূমিকা’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠান আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্নও করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করা হয় ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদকে। পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটি ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে করার অনুরোধ করা হয়। গতকাল বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। যথাসময়ে সাংসদ ও মেয়র অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। তবে আলোচনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত স্থগিত করা হয় অনুষ্ঠান। পরে সাংসদ ও মেয়র পৌরসভা কার্যালয়ের একটি কক্ষে যান। সেখানে স্বল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে নিয়ে চা-চক্রে মিলিত হন দুজন। এ সময় স্থগিত হওয়া অনুষ্ঠানটি পরবর্তী সময়ে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে করার বিষয়ে একমত হন দুই নেতা। গৌরীপুরের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেন তাঁরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাংসদ নাজিম ও মেয়র রফিকুলের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌঁছায় দুই ঘটনায়। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমানকে গত ১৭ অক্টোবর কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মাসুদুর ৩০ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। পরে মেয়র রফিকুলকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়। ওই নির্বাচনে রফিকুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। নির্বাচনে সাংসদ নাজিমের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনের দিন মেয়র মুঠোফোনে সাংসদকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে সাংসদ থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। পরবর্তী সময়ে গত ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় সাংসদের গাড়িতে মেয়রের লোকজন হামলা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সংবাদ সম্মেলন করে সাংসদ নাজিম এ অভিযোগ তোলেন। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়রও। এতে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন সাংসদের ছেলে তানজিরের সমর্থকেরা। এভাবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে গৌরীপুরের রাজনীতিতে দেখা দেয় অস্থিরতা।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে দুই নেতার একসঙ্গে মিলিত হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান স্থগিত হলেও দুই নেতা একসঙ্গে বসে চা-চক্র করে সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে সাংসদের সঙ্গে কিছুটা রাজনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। এ নিয়ে আমরা খোলাখুলি কথা বলেছি। কথা বলার পর সেই বিরোধ মিটেছে। গৌরীপুরের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে বিরোধ মেটাতে আমরা তৎপর ছিলাম।’

সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে অনেক সময় মতবিরোধ হতে পারে। তবে উন্নয়নের স্বার্থে সেই বিরোধ ধরে রাখা ঠিক নয়। পৌরসভার অনুষ্ঠানে আমাকে প্রধান অতিথি করা হলে আমি তাতে সম্মত হই। অনুষ্ঠান স্থগিত হলেও মেয়রের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’

BBS cable ad

মেয়র এর আরও খবর: