র্যাবের অভিযানে অটোরিকশা চালক মাসুদ হত্যাকান্ডের মূল হত্যাকারী ফরিদ গ্রেফতার
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
শনিবার (২ অক্টোবর, ২০২১) সাভার থানাধীন বিনোদ বাইদ গ্রামের অটোরিকশা চালক মাসুদ শেখ (২৭), জেলা-রাজবাড়ী অটোরিকশা চালানোর জন্য বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে এতদ্সংক্রান্ত বিষয়ে ভিকটিমের ভাই মোঃ মজনু মিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এই নিখোঁজের খবর প্রচার করেন এবং সাভার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর, ২০২১) ফেইসবুকের মাধ্যমে সাংবাদিকের মারফত জানতে পারেন তার ভাইয়ের লাশ মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন দাশেরহাটি গ্রামে পাওয়া যায়। তার পরপরই মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর, ২০২১) মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি মিডিয়াতে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে র্যাব-৪ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি পূর্বক ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৬ অক্টোবর, ২০২১) র্যাব-৪ এর একটি অভিযানিক দল সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্টতায় মূলহত্যাকারী মোঃ ফরিদ (৩৩), জেলা-মানিকগঞ্জ’কে ভিকটিমের নিকট হতে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত গামছা ও ছুরি উদ্ধারসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ফরিদ হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেয়। অতঃপর তার তথ্য মতে খরার চর বাজারস্থ আলমাস হোসেনের গ্যারেজের ভিতর থেকে ভিকটিমের অটোরিক্সা এবং পরবর্তীতে ঘটনাস্থল হতে ২ কিঃমিঃ দূরে গোবিন্দল গ্রামের তালপট্টি জামে মসজিদের পাশে তালপট্টি ব্রীজের নিচ হতে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও গামছা উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকান্ডটি সম্পূর্ণভাবে পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড। গ্রেফতারকৃত আসামী অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের সহিত সক্ষতা গড়ে এবং ভিকটিমের অটোরিক্সা ভাড়ায় নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন দাশেরহাটি আলমমারা ব্রিজ সংলগ্ন কাদের আলী কোম্পানীর বাউন্ডারী ওয়ালের ভিতর নির্জন জায়গা কৌশলে নিয়ে যায় এবং ভিকটিম মাসুদের গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে ও ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মৃতদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে আসে। ভিকটিমের অটোরিক্সা নিয়ে পালানোর সময় আসামী মাসুদ হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকু ও গামছা সিংগাইর থানাধীন গোবিন্দল গ্রামে তালপট্টি ব্রীজের উপর থেকে ক্যানেলের মধ্যে ফেলে দেয়, অটোরিক্সাটি সিংগাইর থানাধীন খরার চর বাজারে জনৈক আলমাস হোসেন এর অটোপার্সের দোকানে রাখে এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি আসামীর নিজ বাড়িতে রাখে। এরপর সে আত্মগোপনে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।