South east bank ad

মেট্রো রেল প্রকল্পের চুরির সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ১১ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

 প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৮ অপরাহ্ন   |   র‍্যাব

মেট্রো রেল প্রকল্পের চুরির সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ১১ সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ঢাকা মহানগরীর শাহআলী থানাধীন এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি চোরাকারবারী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ মেট্রো রেল প্রকল্প ছাড়াও সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের আইবীম ছাড়াও অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরি করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতি চতুর চোরাই দল বিভিন্ন পন্থায় চোরাই দ্রব্য দ্রুত খন্ড খন্ড করে কেটে তা বিভিন্ন ভাঙ্গারী ও চাহিদাকারী ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে  আজ সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১) র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর শাহআলী থানাধীন বেরিবাধ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাইকৃত ১৮ টি আইবীম যার ওজন ৪০ টন (বাজার মূল্য ২৫ লক্ষ টাকা), ০১ টি ট্রাক, ০১ টি প্রাইভেটকার, নগদ ৪২৩০০০/-টাকা ও ১৬ টি মোবাইলসহ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের নিম্নোক্ত ১১ জন সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ

মূল চোরাই দলঃ মোঃ মোতালেব শিকদার (৫৪), জেলা- মাদারীপুর; মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৪), জেলা- পটুয়াখালী; মোঃ হাবিব উল্লাহ ভুঁইয়া (৪৩), জেলা- ব্রাহ্মনবাড়ীয়া এবং মোঃ ওয়ালীউল্লাহ ওরফে বাবু (৪১), জেলা- ব্রাহ্মনবাড়ীয়া।

দালাল দলঃ সুমন ঘোষ (৪৩), জেলা- ঢাকা; আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৮), জেলা- গাজীপুর; মোঃ আঃ ছাত্তার (৫৮), জেলা- ঢাকা; মোঃ আশিক (৩১), জেলা- ঢাকা এবং মোঃ আমজাদ হোসেন রাজন (৩৬), জেলা- শরীয়তপুর।

চোরাই দ্রব্য ক্রয়কারী ইচ্ছুক দলঃ মোঃ মনির (৪০), জেলা- জামালপুর ও মোঃ রিয়াজুল (২০), জেলা- গোপালগঞ্জ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা পরষ্পরের যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প ছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের আইবীম ছাড়াও অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরির ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা একটি বিশেষ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের সাথেও জড়িত। গ্রেফতারকৃত আসামীরা পরস্পর যোগসাজোশে কিছুদিন যাবত ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প ছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের আইবীম ছাড়াও অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরি করে খন্ড খন্ড করে কেটে তা বিভিন্ন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করে আসছিল। 

অপরাধের কৌশলঃ

গত কয়েক বছর যাবত ঢাকাসহ আশপাশ জেলা সমূহে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিচালিত হয়ে আসছে। উক্ত প্রকল্প সমূহের কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরনস্তুপ আকারে থাকা কালে একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল সু-কৌশলে সুবিধা বুঝে সুযোগ মতো চুরি করে তাদের পছন্দ মতো গোপন একটি জায়গায় নিয়ে এসে সেগুলো কে সহজে বহনযোগ্য করে বিভিন্ন ক্রেতাদের নিকট তা বিক্রয় করে থাকে। তাদের উক্ত চোরাই চক্রটি মূলত এই চুরির কাজটি নিন্মেবর্ণিত ধাপে সম্পন্ন করে থাকেঃ

তথ্য প্রদানঃ

প্রথমে এই চোরাকারবারি চক্রটি সু-কৌশলে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই অনুযায়ী চুরির পরিকল্পনা করে থাকে।

সাহায্যকারী ব্যক্তিঃ

পরবর্তীতে চক্রটি প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রজেক্টের আরোও অন্যান্য লোকজনের সহায়তায় বিভিন্ন উপকরন সুবিধা বুঝে সুযোগ মতো চুরি করে তাদের পছন্দ মতো গোপন একটি জায়গায় নিয়ে লুকিয়ে রাখে। 

দালাল (বিভিন্ন ধাপ)ঃ 

এই ধাপে একটি গ্রুপ চোরাইকৃত উপকরন সমূহ পরিবর্তন পরিবর্ধন করে সহজে বহনযোগ্য করে থাকে। পরবর্তীতে উক্ত মালামাল সমূহ ক্রয় করে এরূপ ক্রেতাদের সাথে প্রথম ধাপের চোরাই দলের সাথে যোগাযোগ করে দেয়। 

ইচ্ছুক ক্রেতাঃ

এই ধাপে মূলত চোরাইকৃত মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের কাজটি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এতে চোরাই চক্রটি তাদের চোরাইকৃত পরিবর্তন ও পরিবর্ধনকৃত মালামাল তাদের পূর্বে থেকে নির্ধারিত ক্রেতাদের নিকট একটি নিদিষ্ট মূল্যের বিনিময়ে বিক্রয় করে থাকে। চোরাই চক্রসহ অন্যান্য চক্রের আরও অনেক পলাতক আসামী রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এরূপ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী দলসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।
BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: