South east bank ad

হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত আসামিকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক ২

 প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:১৪ অপরাহ্ন   |   র‍্যাব

হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত আসামিকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক ২
হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত থাকা ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিকে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটেছে। ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির ঘটনায় ৯৫  লক্ষ  টাকার  চেক  ও  নগদ  ৫  লক্ষ  টাকা  এবং  অন্যান্য  নথিপত্র,  সরঞ্জামাদিসহ সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ২ জনকে আটক করেছে র‌্যাব।ভিকটিমের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় ভিকটিমকেও আটক করেছে র‌্যাব-১।   
র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময়  বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে  অত্যন্ত  অগ্রণী  ভূমিকা  পালন  করে  আসছে।  র‌্যাবের সৃষ্টিকাল  থেকে  এ  পর্যন্ত  অপহরণকারী,  সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামি, ছিনতাইকারি, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারিদের আটক করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।   
গত ৩১ আগস্ট ২০২১ইং তারিখ মঙ্গলবার দুপুরে ভিকটিম মো. আব্দুল মালেককে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সংক্রান্ত ভিকটিমের কাছে আত্মীয়রা র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক বরাবর অভিযোগ দায়ের করে। 
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ ভিকটিমকে উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।  
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ আগস্ট ২০২১ইং তারিখ মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত  র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা-এর একটি  আভিযানিক  দল  উত্তরার  একটি  আবাসিক  হোটেলে  অভিযান  চালিয়ে  ভিকটিম  উদ্ধারসহ  চক্রের  মূল পরিকল্পনাকারী  মো.  ইকবাল  হোসেন  (৩১),  পিতা :  মো.  আলমগীর  হোসেন,  গ্রাম : সমবায়  গ্রাম,  পোষ্ট : আলেকজেহুার, থানা : রামগাতী, জেলা : লক্ষীপুর ও তার সহযোগী মো. আমিরুল ইসলাম (৩৫), পিতা : মো. আক্তার  শেখ,  মাতা :  শেফালী  বেগম,  গ্রাম :  নগরকান্দা  (শেখ  বাড়ী),  থানা : আলফাডাঙ্গা,  জেলা : ফরিদপুরকে আটক করা হয়। 
এ সময় আটক করা আসামিদের কাছ থেকে ১টি ক্যামেরা, টিভি মাইক্রোফোন, ৩টি ১০০ টাকার ষ্টাম্প,  ২টি  ব্যাংকের  চেক  (একটি  ৪৫ লাখ টাকা অপরটি  ৫০ লাখ টাকা),  নগদ  ৫ লাখ ৫ হাজার ১৬০ টাকা মুক্তিপণ বাবদ অর্থ এবং অন্যান্য নথিপত্র ও  সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক করা আসামিরা উক্ত অপরাধে সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়েছে।  
আটক করা আসামিরা জানায়, আটক করা আসামিরা অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকদিন  ধরে  ভিকটিম  সম্পর্কে  তথ্য  সংগ্রহ  করে। এসব  বিষয়ে  মূল  পরিকল্পনাকারী আটক হওয়া ইকবাল।  চক্রটি বেশ কয়েকবার  বিষয়টি নিয়ে শলা-পরামর্শ করে। এ অনুযায়ী  তারা ভিকটিমের উত্তরখানে আগমনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গত ৩১ আগস্ট ২০২১ইং তারিখ মঙ্গলবার ভিকটিমের উত্তরখানে আগমনের বিষয়ে জানতে পেরে ওই দিন সকালে উত্তরখানের একটি দোকানে বসে পরিকল্পনা চুড়ান্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ আগস্ট ২০২১ইং তারিখ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা উত্তরখানে ভিকটিম তার কাছে আত্মীয় মো. জামির হোসেনের বাসায় অবস্থানের সময়ে আটক করা এবং তাদের সহযোগীরা উপস্থিত হয়। অতঃপর তারা ভিকটিমের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে হলমার্ক কেলেঙ্কারি বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করবে মর্মে হুমকি দেয়।
অতঃপর বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভিকটিম মো. আব্দুল মালেককে (৫৪) ঢাকার  উত্তরার  একটি  আবাসিক  হোটেলে  নিয়ে  যায়।  অতঃপর  ভিকটিমের  ফোন থেকে ভিকটিমের  কাছে আত্মীয়দের ফোন করে চাঁদার টাকা, চেক ও স্ট্যাম্প নিয়ে আসতে বলে।
আটক করা আসামিদের প্রাথমিক  জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,  তারা  একটি চাঁদাবাজ দলের  সক্রিয়  সদস্য।  এ দলের  সদস্য  সংখ্যা  আনুমানিক  ১০ থেকে ১৫  জন।  আটক করা আসামিরা  ও  তাদের  চক্রের  সদস্যরা  এলাকায়  প্রাণের বাংলাদেশ, স্বাধীন  সংবাদ,  BW NEWS,  প্রথম  বেলা, ডেইলি নিউজসহ এ জাতীয় আরও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের  পরিচয়  দিয়ে আসছিল। 
জিজ্ঞাসাবাদে  তারা  আরও  জানায়,  তারা  দীর্ঘদিন  ধরে রাজধানীর  উত্তরা  ও  উত্তরখান এলাকায়  এহেন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে বলে স্বীকার করে। 
আটক হওয়া মো. ইকবাল হোসেন ও মো. আমিরুল ইসলামের নামে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা রয়েছে।   
আব্দুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাংকের ঋণখেলাপি। আটক হওয়া আসামি আরও জানায়, সে হলমার্ক কেলেঙ্কারি ঘটনায় সম্পৃক্ততা রয়েছে। সে সময় যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা হয়েছিল তার মধ্যে তার কোম্পানিও ছিল। হলমার্ক মামলার সে একজন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি। ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি হওয়ায় তাকে থানায় সোপর্দ করার ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।  

BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: