বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির ৪২ বছর
‘জনসংযোগ’ শব্দটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন ১৮০৭ সালে তাঁর কংগ্রেস ভাষণের খসড়ায় প্রথম ব্যবহার করেন। তখন থেকেই জনসংযোগ একটি আধুনিক, জরুরী এবং মর্যাদাপূর্ণ পেশা হিসেবে বিকশিত হতে শুরু করে। একটি সৃজনশীল ও কুশলী বিদ্যা হিসেবে ‘জনসংযোগ’ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্ব পেতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বহু স্থানে ‘জনসংযোগ’ একটি পূর্ণকালীন পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বিশ্বের পেশাদার জনসংযোগবিদরা নিজেদের সংগঠিত করে ১৯৫৫ সালে আন্তর্জাতিক জনসংযোগ সমিতি গঠন করেন এবং ১৯৬১ সালে একটি আচরণবিধি চুড়ান্ত করেন। ১৯৬৫ সালের মে মাসে এথেন্সে আন্তর্জাতিক জনসংযোগ সমিতির সাধারণ সভায় জনসংযোগের নীতিমালা প্রণীত হয়। কোড অব এথেন্স নামে খ্যাত এই নীতিমালা ১৯৬৮ সালে তেহরানে সমিতির কাউন্সিল সভায় সংশোধিত ও যুগোপযোগী করার পর পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের জাতীয় জনসংযোগ সমিতিগুলো কর্তৃক গৃহীত হয়। ১৯৭৯ সালের ২২ জুলাই বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি গঠিত হয় এবং ওই বছরেই অনুষ্ঠিত সমিতির প্রথম জাতীয় সম্মেলনে এই নীতিমালা গৃহীত হয়।
আধুনিক বিশ্বের জনসংযোগ প্রচারণা ক্রমবর্ধমান দৈনন্দিন জীবনের অংশ। যোগাযোগ মাধ্যমের দ্রুত বিকাশ ও সমাজে এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ফলে জনসংযোগ আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। “ব্র্যান্ড পাবলিক রিলেশনস” – কেউ কেউ বলে যে পিআর খ্যাতি তৈরি করে, যখন বিপণন আসলে ব্র্যান্ডগুলিকে বাড়িয়ে তোলে। বর্তমান বিশ্বের চরম প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে চাইলে ব্র্যান্ডিং হতে পারে ব্যবসার অন্যতম হাতিয়ার। যে কোন ধরণের বিজনেস এর জন্য ব্র্যান্ডিংটা এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জনসংযোগ আপন বৈশিষ্ট্যের কারণেই আমাদের দেশে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই সমিতি জনসংযোগ ও ব্রান্ডিং পেশার উৎকর্ষে কাজ করে চলেছে। জনসংযোগ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, সিনিয়র এবং জুনিয়র সদস্যদের সক্রিয় ভুমিকা ও সার্বক্ষণিক কার্যক্রম বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং জনসাধারণের কাছে প্রশংসার দাবীদার। বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির গৌরবের ৪২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী (১৯৭৯-২০২১ )আজ । বিশেষজ্ঞ জনসংযোগ কর্মীরা পেশাগত ভবিষ্যত উজ্জ্বল করে কৃতিত্ব ও সাফল্যের সঙ্গে জনসংযোগ সমিতিকে আরো বেগবান করে সামনের দিকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই দেশ ও জাতির প্রত্যাশা।