ভ্রাম্যমাণ টয়লেট পরিচালনা প্রশিক্ষণে বিদেশ যাচ্ছেন ৩ কর্মকর্তা

নতুন পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট (ভিআইপি) পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে চীন যাচ্ছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের তিন কর্মকর্তা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিনের সই করা এক সরকারি আদেশে (জিও) তাদের এই বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর জারি করা ওই সরকারি আদেশে বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সহকারী প্রোকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও উপসহকারী প্রোকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন এ প্রশিক্ষণের জন্য চীন সফরে যাবেন।
আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর কিংবা ছুটি শুরুর তারিখ থেকে সাত দিনের জন্য তারা বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছেন।
সরকারি আদেশে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা পাঁচটি নতুন মোবাইল টয়লেট (ভিআইপি) সরবরাহের বিপরীতে তারা সেগুলো পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। তাদের এ ভ্রমণকে দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং সব ধরনের ব্যয় বহন করবে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান শ্যাংডং কিউয়ানবাই ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।
তবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে নির্দেশ দিয়ে আসছে যেকোনো ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
এ ধরনের সফর নিয়ে এরই মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিগত সময়ে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিদেশ সফর করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ছাড়াও বিদ্যুৎ, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), আইএমইডি এবং অন্যান্য সংস্থার প্রায় ৩৫ কর্মকর্তা ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
এ ধরনের ভ্রমণ সাধারণত নতুন যন্ত্রপাতি, ট্রেইলার, চেইন ডেজার বা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ নাম ধরে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সরকারের বিধিনিষেধ অনুযায়ী, জরুরি জাতীয় স্বার্থ ছাড়া কর্মকর্তারা একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না, আর কোনো ভ্রমণ সরকারি অর্থে হলে সেটি ন্যূনতম ও অপরিহার্য হতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকাদার বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে বিদেশ ভ্রমণ অনৈতিক এবং এটি স্বার্থসংঘাতের সৃষ্টি করে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কমাতে নির্দেশনা থাকলেও এর ব্যত্যয় হচ্ছে। ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে ভ্রমণ অনৈতিক এবং কর্মকর্তাদের ওপর ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য তৈরি করে। এতে মানসম্মত পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্বে প্রভাব পড়ে।