South east bank ad

রমেশকে দোকান দিল শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন

 প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৩, ০৯:৩১ অপরাহ্ন   |   জেলা প্রশাসন

রমেশকে দোকান দিল শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা রমেশ মাঝিকে একটি দোকান করে দিয়েছেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি)। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান ও নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য দোকানের মালামাল ও দোকানঘরের চাবি রমেশ মাঝির হাতে তুলে দেন।

৫২ বছর ধরে কীর্তিনাশা নদীতে যাত্রী পারাপার করছেন রমেশ মাঝি। যাত্রী পারাপার করে কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেন না। এ নিয়ে গত ১৩ জুলাই ‘তিন পুরুষের পেশা, কীর্তিনাশা পারাপারে আজও পয়সা নেন না রমেশ মাঝি’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ নজরে আসে শরীয়তপুরের ডিসির। তিনি নড়িয়ার ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জপসায় পাঠিয়ে রমেশ মাঝির খোঁজখবর নেন। এরপর তাঁকে পুনর্বাসন করার জন্য জপসার লক্ষ্মীপুরে খেয়াঘাটে দোকান নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন।

জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে বদলি হয়েছেন। আজ বুধবার শরীয়তপুরে তাঁর শেষ কর্মদিবস। তাই গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জপসার লক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে নির্মাণাধীন দোকানঘরের চাবি ও দোকানের মালামাল রমেশ মাঝির হাতে তুলে দেন তিনি।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বংশপরম্পরায় রমেশ মাঝি কীর্তিনাশা নদীতে নৌকা চালিয়ে মানুষজন পারাপার করেন। রমেশের বয়স এখন ৬২ বছর। ১০ বছর বয়সে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় লগি-বইঠা হাতে নিয়ে নৌকায় ওঠেন রমেশ। ৫২ বছর ধরে এ কাজ করছেন তিনি। তাঁর ঠাকুর দাদা ধনঞ্জয় মাঝি, তারপর তাঁর বাবা যজ্ঞেশ্বর মাঝি এভাবেই নৌকা চালিয়ে গ্রামের মানুষদের পারাপার করতেন। তাঁরা কখনো কারও কাছ থেকে টাকাপয়সা নেন না, গ্রামের মানুষের দেওয়া খাদ্যশস্যে পরিবার চলে।

জপসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মাদবর প্রথম আলোকে বলেন, রমেশ মাঝি একজন মানবিক মানুষ। তিনি ও তাঁর পরিবার বিনা পয়সায় নদী পারাপার করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা অতুলনীয়। এলাকার মানুষ তাঁকে ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন।


নড়িয়ার ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাজে এখনো এমন মানুষ আছেন ভাবলে আশ্চর্য হই। রমেশ মাঝিকে সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তাঁকে দোকান করে দেওয়া হচ্ছে। দোকানের মালামাল দেওয়া হয়েছে। তাঁর বাড়িতে একটি নলকূপ করে দেওয়া হবে।’

রমেশ মাঝি বলেন, ‘আমার খোঁজ নিতে ডিসি সাহেব আসতে পারেন, আমাকে দোকান করে দিতে পারেন তা ভাবতে পারিনি। নৌকা চালানো বন্ধ করে দিলেও দোকানের আয়ে বাকি জীবন কাটাতে পারব।’

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, ‘রমেশ মাঝির ঘটনা শোনার পর আবেগতাড়িত হয়েছিলাম। তাঁদের মতো নির্লোভ মানুষ এখনো সমাজে আছেন। এমন মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এমনিতেই চলে আসে। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। বাকি জীবন যাতে তাঁর অর্থকষ্টে না কাটাতে হয়, সেই ভাবনা থেকে তাঁকে দোকান নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।’- প্রথম আলো
BBS cable ad

জেলা প্রশাসন এর আরও খবর: