কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণা

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এর কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচয় দিয়ে জামালপুর জেলার উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানাকে ফোন করেন এক ব্যক্তি। তাকে বলা হয় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এর শ্যালিকাকে জামালপুর জেলার ইসলামপুরে বিয়ে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রীর শ্যালিকার এখনই ২৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাকে যেনো তিনি (জাকিয়া সুলতানা) ২৫ হাজার টাকা ওই নাম্বারের নগদ অ্যাকাউন্টে পাঠান। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয় জাকিয়া সুলতানার। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোলকে বিস্তারিত জানান। তক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত সচিব ওই নাম্বারে টাকা পাঠাতে নিষেধ করেন।
এই ঘটনার পরে একই পরিচয়ে শেরপুর জেলার উপ-পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে ও ময়মনসিংহ জেলার উপ-পরিচালক ড. মো. রেজাউল করিম কাছেও ফোন করা হয়। তাদের কাছেও একইভাবে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। তাদের কাছেও বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তারাও বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে জানান।
পরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)‘র সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সোহেল ইসলাম রানা ও শাকিল ইসলাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় কাছ থেকে প্রতারণারকাজে ছয়টি মোবাইল ফোন ও ১১টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের প্রধান সোহেল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে প্রতারণা, মাদক, মারামারি, নারী নির্যাতন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১টি মামলা রয়েছে।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার রানা একসময় মন্ত্রীর পিএস, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয় দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি নিজের সামাজিক অবস্থান প্রকাশ ও প্রতারণার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো প্রতারণার কাজে ব্যবহার করতেন। এছাড়াও প্রতারক রানা সংসদ সদস্যদের গাড়ির ব্যবহৃত স্টিকার তার নিজের গাড়িতে ব্যবহার করে প্রতারণা করতেন। গাড়িতে সংসদ সদস্য লেখা স্টিকার ব্যবহার করার অপরাধে ২০১৫ সালে রাজধানীর সালে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার প্রতারক রানার সহযোগী শাকিল ইসালামের বিরুদ্ধে মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)র অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, এই প্রতারককে গ্রেপ্তারের পর দেখা যায় বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপিদের সঙ্গে তার অনেক ছবি। তার প্রতারণার অন্যতম একটি কাজ হলো ছবি তোলা। এই সকল ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলো। গ্রেপ্তার প্রতারক কিন্তু সচিবের গলার কণ্ঠস্বর নকল করে প্রতারণা করছিলো।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল ব্যবহার করে আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে। এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে যাচাই করতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সহযোগিতা করবো।