শিরোনাম

South east bank ad

মগবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে গ্যাস লিকেজ বন্ধ করেছে তিতাস

 প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২১, ০৩:২২ অপরাহ্ন   |   তিতাস

মগবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে গ্যাস লিকেজ বন্ধ করেছে তিতাস
রাজধানীর মগবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ধসে পড়া রেখানীড় ভবনের নিচ থেকে গ্যাস লিকেজ বন্ধ করা হয়েছে। ভবনটির সামনের অংশকে মাটি খুঁড়ে গ্যাস পাইপের লিকেজ স্থনে সিলগালা করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিউশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।
রোববার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এই গ্যাস লিকেজ বন্ধ করা হয়।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিউশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সহকারী ম্যানেজার (ঢাকা দক্ষিণ শাখা) দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে রোববার সকাল থেকে রাজধানীর মগবাজারের আউটার সার্কুলার রোডে বিস্ফোরণে ধসে পড়া ওই ভবনের নিচ থেকে গ্যাস লিকেজ হয়ে ধোঁয়ার মতো বের হতে শুরু করে। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা তা দেখেন এবং দ্রুত বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কন্ট্রোলরুমে জানান। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুই ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গ্যাস বন্ধের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে কাজ করতে থাকেন। এরই মধ্যে তারা তিতাস গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটিকে বিষয়টি অবগত করেন।

তিতাসের ঢাকা দক্ষিণ শাখা সহকারী ম্যানেজার দিদারুল আলম বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে ধসে পড়া ওই ভবনের সামনে (সড়কের পাশে) অংশে মাটির নিচ থেকে গ্যাস বেরোচ্ছিলো। তা অনুসন্ধান করে সেখানের মাটি খুঁড়ে গ্যাসের পাইপ খুঁজে বের এবং লিকেজ অংশ বন্ধ করে তা সিলগালা করা হয়।  
এদিকে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস কর্তৃপক্ষ এতদিন দাবি করছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনটি কোথা কোনো গ্যাস পাইপ নেই। ভবনের মালিক আমাদের গ্রাহক নন। ঘটনার পর তারা ঘটনাস্থল তদন্ত করে সেখানে গ্যাস পাইপ নেই বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনার সপ্তাহ পার হতে না হতেই ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনের মাটির নিচ থেকে গ্যাস বের হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সেখানে গ্যাসের পাইপের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভবনের প্রবেশ গেটের বাম পাশেই একটি গ্যাস পাইপ লাইনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মাটির নিচ থেকে উঠে আসা কালো টেপ পেঁচানো গ্যাসের পাইপটি একটি রাইজারের সংযুক্ত হয়ে তা ভবনের দোতলারা দিকে ওপরে উঠে গেছে। তবে, সেখানে গ্যাসের রাইজার পাওয়া যায়নি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট  কর্মকর্তারা আরও বলছেন, তদন্তে এখন পর্যন্ত আমাদের ধারণা গ্যাস লিকেজ থেকে ভবনের নিচতলার পেছনের কক্ষগুলো গ্যাস চেম্বারের পরিণত হয়। এরপর বিদ্যুতের স্পার্ক বা আগুনের সংস্পর্শে এসে তার ভয়াবহ বিস্ফোরণের আকার ধারণ করে। যা প্রচণ্ড প্রেশার তৈরি করে এবং ভবনের দেওয়াল, পিলারসহ সব ধসিয়ে ফেলে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালন (অপারেশন্স অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা, করছি গ্যাস লিকেজ থেকে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাছাড়া ভবনের ভেতরে আমরা একটি গ্যাস লাইন পাইপের অস্থিত্বও পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে বিস্তারিত পরবর্তীতে বলা সম্ভব হবে।  

গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় দিকে রাজধানীর মগবাজার ওয়ারলেস গেট এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ। বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৯ জুন অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ভবন মালিকের সার্বিক অব্যবস্থাপনা, অতি পুরনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনার কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

BBS cable ad