প্রথমবারের মতো সাভার মডেল থানায় টোকেন পদ্ধতিতে সেবা চালু
সেবা নিতে থানায় প্রবেশের পর প্রথমে সংগ্রহ করতে হবে টোকেন, তারপর ক্রমানুযায়ী মিলবে সেবা। বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেবাগ্রহীতাদের সেবাদানে ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে সাভার মডেল থানায় দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে এই কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বার্ষিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে সাভার মডেল থানা পরিদর্শনে এসে টোকেন পদ্ধতির উদ্বোধন করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।
এর আগে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরিদর্শনের শুরুতেই সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে একটি চৌকস দলের সালামী গ্রহণ ও সালামী প্যারেড পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
পুলিশ সুপার নিজেই টোকেন সংগ্রহ করে সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এবং সেবা গ্রহীতাদের সাথে আলাপ করেন।
টোকেন পদ্ধতিতে সেবা চালুর প্রথম দিনেই সাভার মডেল থানায় আসা সেবাগ্রহীতারা জানান, টোকেন সিস্টেমটা খুব ভালো হয়েছে। আগে টোকেন ছাড়া আসলে কেউ বলত আমার তাড়া আছে, কেউ বলত আমাকে আগে দেন। আগে বিশৃঙ্খলা হতো, এখন কোনো হয়রানির সুযোগ নেই।
সালামী প্যারেড শেষে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, প্রায়ই এমন হয় অনেক সেবাগ্রহীতা একসঙ্গে চলে আসেন। আমরা অভিযোগ পাই যে, থানায় জিডি করতে এসে বা কোনো সেবা নিতে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। দেখা যায় অনেকেই অপেক্ষা করছেন কিন্তু তারা জানেন না যে কার পরে কে? কিংবা কতক্ষণ তাকে অপেক্ষা করতে হবে। কর্পোরেট অফিস, ব্যাংকে এমন পদ্ধতি আছে। কিন্তু পুলিশিং কার্যক্রমে থানা পর্যায়ে এই প্রথম আমরা এই থানায় টোকেন পদ্ধতি চালু করেছি। দেশে প্রথমবারের মত সাভার মডেল থানায় আমরা কার্যক্রমটি চালু করেছি, পর্যায়ক্রমে ঢাকা জেলার অন্যান্য সব থানায় এ পদ্ধতি শুরু হবে।
সাভার মডেল থানা পরিদর্শনকালে ওয়ারেন্ট তামিল, মাদক বিরোধী অভিযান, থানা এলাকায় নিয়মিত টহল জোরদার সহ নিয়মিত ভাবে বিট পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেন পুলিশ সুপার। তিনি নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজাকে সামনে রেখে আরো সতর্ক অবস্থায় ডিউটি পালন করার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরে থানার গুরুত্বপূর্ন রেজিস্ট্রারপত্র পর্যালোচনা, অফিসার ফোর্সদের দৈনন্দিন কার্যক্রম পর্যবেক্ষন, মালখানা ও হাজত খানা, সরকারী অস্ত্রগুলি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং সেবা প্রত্যাশীদের প্রতি যথাযথ সেবা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যাহত, সরকারী সকল সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও সংরক্ষণসহ থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক পরিদর্শন, থানায় আগত সেবা প্রার্থীদের গুণগত সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশিরা হাবিব খান, সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, আশুলিয়া থানার ওসি এইচ এম কামরুজ্জামান, সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।