ইয়াস: ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় জনগোষ্ঠির সহায়তায় এগিয়ে আসুন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ইতিমধ্যে ভারতের উপকূল অতিক্রম করছে। অবস্থানগত বিবেচনায় এটি বাংলাদেশ থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশ মুক্ত বলা যেতে পারে। তবে ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় ৯ জেলার ২৭ উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারতীয় উপকূল এলাকাতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার সময়ে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার। বাতাসের বেগ কখনও কখনও ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যায়। তার প্রভাবে ইতিমধ্যে ভারতের উড়িষ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিলো যে, ইয়াস সরাসরি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে না। তবে এর প্রভাব পড়বে। তারপরেও সুন্দরবন, সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ উপকূলের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করার মতো। অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ২৭টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভোলার লালমোহন উপজেলায় গাছ চাপা পড়ে একজন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
করোনাকালে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেশের উপকূলীয় জনগোষ্ঠির জন্য এক বাড়তি দূর্যোগ। আয় কমে যাওয়ার এই সময়ে ক্ষেতের ফল-ফসল, বাড়িঘর ঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মানুষকে সমস্যায় ফেলেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনকূলে সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও অর্থ বরাদ্দ দেয়া থাকলেও তা ক্ষতিগ্রস্ত সবার কতোটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও অবস্থাসম্পন্নদের দূর্যোগকালে এগিয়ে আসা উচিত।
আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, কোনো ঘূর্ণিঝড়ের পরে ক্ষতিগ্রস্ত ও অরক্ষিত বাঁধগুলো দিয়ে জোয়ার পানি অবাধে ঢুকে আরেকটি বিপর্যয় তৈরি করে। যা আইলা ও সিডরের পরে উপকূলবাসীকে বেশ ভূগিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ উপকূলবাসীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষতি জনগণ অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবে।