দৌলতদিয়া ঘাটের চাঁদাবাজি, বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা জড়িত থাকার অভিযোগ
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার চাঁদাবাজিতে বিআইডব্লিউটিসির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা জড়িত। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন থেকে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে। এমন অভিযোগ করেছেন দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এ অভিযোগ করেন তিনি।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে নির্বিঘ্নে ফেরি পারাপার, লঞ্চসহ অন্যান্য জলযানসমূহের সুষ্ঠু চলাচল, ঘাটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।
কীভাবে চাঁদাবাজি করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি পারাপারে বাধ্য করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়। বিশেষ করে মাঝারি ধরনের ট্রাকের ভাড়া ১ হাজার ৫০০ টাকা। সেখানে আনসার সদস্য, বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সেই ভাড়া বেশি নেওয়া হয় ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা। ফেরির টিকিট কাউন্টারের লোকজন সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ট্রাক থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে।
চেয়ারম্যানের এমন অভিযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক মো.সালাহউদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমরা ঘাট পরিচালনা করে থাকি। যদি কেউ ঘাটে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। ঈদকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করেন। কোথাও চাঁদাবাজি হয়ে থাকলে এবং অনিয়ম হলে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমন্বয় সভা থেকে জানা গেছে, আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জরুরি পণ্য ও সেবা ব্যতীত সকল পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ঈদের আগে ও পরে ছয়দিন ফেরি পারাপার করতে পারবে না। এছাড়া ৬ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পদ্মা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলও বন্ধ থাকবে। ঈদযাত্রায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে। ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক থেকে ফেরির পল্টুন পর্যন্ত কোনো ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিকশা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রাণবন্ধু বিশ্বাস, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো.সালাহউদ্দীন, বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এস. এম. সাজ্জাদুর রহমান, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান ও রাজবাড়ী বাস মালিক গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।