সাবেক সচিব প্রশান্তের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ও বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প ‘একটি বাড়ি একটি খামার’র সাবেক পিডি ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৫ জুন) সকালে দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রশান্ত কুমার রায় দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন, সেই সঙ্গে সম্পদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদান করেন।
দুদক দীর্ঘ অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে, তিনি অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্পদ অর্জনের বিপরীতে আয়কর নথি অনুযায়ী আসামী ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের নামে বেতন ভাতাদি হতে আয়, ব্যাংক সুদ হতে আয়, কৃষি আয়, কর অব্যাহতি ও করমুক্ত আয়সহ সর্বমোট ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৩ হাজার ২৮৭ টাকার বৈধ আয় পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ব্যয় ২ কোটি ১ লাখ ২৬ হাজার ১৭৮ টাকা বাদ দিয়ে এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
মামলা এজাহারে আরো বলা হয়, প্রশান্ত কুমার রায় ও তার উপর নির্ভরশীলগণের নামীয় সোনালী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংকের ১২টি শাখায় বিভিন্ন তারিখে ১৩ কোটি ২৪ লাখ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা জমা ও ১২ কোটি ৯৮ লাখ ৭২ হাজার ১৮৩ টাকা উত্তোলন করেন। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে তার ও তার উপর নির্ভরশীলগণের বর্ণিত লেনদেন অস্বাভাবিক ও অসঙ্গতিপূর্ণ।
এজাহারে বলা হয়, ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বোনের ছেলে মনোজ কুমার প্রায় ৩৫ বছর ধরে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ড. প্রশান্ত কুমার রায় ২০০৭ সালে ওই ব্যক্তির নামীয় ভূমির আমমোক্তার নিযুক্ত হয়ে ২০১৮ সালে ১ কোটি ৫৫ টাকা মূল্যের জমি বিক্রি করেন। একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যক্তির নিকট থেকে আমমোক্তারনামা গ্রহণ ও ভূমি ক্রয় বিক্রয় করার বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ না করে অপরাধ করেছেন। এছাড়া ওই জমি বিক্রয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থ হতে ৫০ লাখ টাকা তিনি তার ভাগ্নে মনোজ কুমারকে হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।