যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ১২ বছর পলাতক আসামী মোঃ সোহাগ হাওলাদার কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা হতে বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানা এলাকার চাঞ্চল্যকর ০৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ১২ বছর পলাতক আসামী মোঃ সোহাগ হাওলাদার (৩২)'কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
র্যাব-৪ জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি মনুষ্য অপরহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ২৬ মে ২০২৩ তারিখ ভোরে রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা হতে বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট এলাকার চাঞ্চল্যকর ০৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও দীর্ঘ ১২ বছর ধরে পলাতক আসামী মোঃ সোহাগ হাওলাদার (৩২)'’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিমের ও আসামী প্রতিবেশী ছিলো। ভিকটিমের বাবা রিকশাচালক এবং মা অন্যের বাড়িতে কাজ করার সুযোগে ঘটনার দিন আসামী সোহাগ ভিকটিমের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমকে একা পেয়ে দোকান থেকে খাবার কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ভিকটিমকে নিজ ঘরের ভিতরে নিয়ে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
অতঃপর ভিকটিমকে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষ অবস্থায় ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে ধর্ষক সোহাগ পালিয়ে যায়। ভিকটিম বাঁচার জন্য চিৎকার করলে আশেপাশের প্রতিবেশীরা এসে ভিকটিমকে ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমের বাবা ও মাকে সংবাদ দিলে তারা তাৎক্ষণিক বাড়িতে এসে ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে এবং একই দিন ভিকটিমের মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল মহানগরীর বিমানবন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, বরিশাল সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২১ সালের মে মাসের শেষের দিকে আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা রুজু এবং একই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে আসামী লোক চক্ষুর আড়ালে আত্মগোপনে গিয়ে গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকায় চলে আসে এবং কখনো রিকশাচালক, দিনমজুর, কুলি ইত্যাদি কাজ করতে থাকে। আসামি দীর্ঘদিন একই স্থানে বসবাস করত না। কিছুদিন পর পর সে স্থান ও নিজের পেশা পরিবর্তন করতো। গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে আসামি জীবিকা নির্বাহের জন্য মিরপুর দারুস সালাম এলাকায় কাঠমিস্ত্রি সহকারী হিসেবে কাজ করতো।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামীকে বরিশাল মহানগরীর বিমান বন্দর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।