চাঞ্চল্যকর শিউলি হত্যা মামলায় পলাতক আসামী আলভী সহ দুইজন’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭

নিহত নারী ভিকটিম চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন জঙ্গলখাইন এলাকার বাসিন্দা। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে বিকাল আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় ভিকটিমের দুটি সন্তান তার বাসার ছাদে খেলাধুলা করছিল। এসময় বসত ঘরের নীচ হতে প্রতিবেশী তাহাসিন ভিকটিমের সন্তানদের কাছে থাকা ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যাট নীচে ফেলার জন্য বললে ভিকটিমের সন্তানরা খেলার ব্যাট দিয়ে অপারগতা প্রকাশ করে। তখন প্রতিবেশী তাহাসিন তাদের বাড়ীর অন্য একটি বাসার ছাদে উঠে ভিকটিমের সন্তানদের লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করলে ভিকটিমের ছোট ছেলে ছামিম মাথায় গুরত্বর রক্তাক্ত আঘাত প্রাপ্ত হয়। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম এবং প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগম এর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম তার ছেলে সন্তানকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় আমজুর বাজারে নিয়ে যান এবং চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে এসে সন্ধ্যা আনুমানিক ১৮১৫ ঘটিকায় বিচারের জন্য মনোয়ারা বেগম এর বাড়ীতে গেলে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র সেখানে আলভী এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্বপরিল্পিত ভাবে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে এবং বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে গুরত্বর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের আত্ম-চিৎকারে তার পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানায় ০৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২১, তারিখ-১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩৩২/৩২৪/৩২৬/ ৩০৭/৩০২/৩৭৯/ ৪২৭/৩৪,দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার ০১নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মোঃ আলভী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৪ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে আনুমানিক ১৯৪০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১, ঢাকা এর যৌথ আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ আলভী (২১), পিতা-ওবায়দুল হক প্রকাশ বাচা মিয়া, সাং- জঙ্গলখাইন থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আলভীর দেওয়া তথ্যমতে অপর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন আইডিয়াল মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার ০২নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মনোয়ারা বেগম (৩৮), স্বামী-ওবায়দুল হক প্রকাশ বাচা মিয়া, সাং- জঙ্গলখাইন, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করত সূত্রে বর্ণিত মামলার ০১ এবং ০২নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। এছাড়াও তারা মামলা দায়ের এর পর হতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে গাজীপুর এবং ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে জানায়। উল্ল্যখ্য যে, গত ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন কল্পলোক আবাসিক এলাকা হতে সূত্রে বর্ণিত মামলার ০৪নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মোহাম্মদ মাহমুদুল হক প্রকাশ মুন্সি মিয়া (৫২), পিতাঃ মোহাম্মদ আব্দুল হক’কে গ্রেফতার পূর্বক থানা পুলিশর নিকট হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাদের’কে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।