যশোরে দুই যুবককে হত্যার পর লাশ গুম মামলায় সাবেক এসপিসহ আসামি ১০

যশোর শহরের পৌর পার্ক থেকে তুলে নেওয়া দুই যুবককে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে যশোরের সাবেক পুলিশ সুপার, সাবেক ডিআইজি আনিসুর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সাইদুর রহমান নামের এক নিখোঁজ যুবকের বাবা কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন এ মামলা দায়ের করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী অভিযোগটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানকে।
বাকি আসামিরা হলেন- টিএসআই রফিকুল ইসলাম, শংকরপুরের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, পিরোজপুরের কুমারখালী গ্রামের ফুলু মিয়া, রমিজ শেখ, নাসির শেখ, সাইফুল শেখ, হারুন অর রশিদ শেখ, জাহিদুল শেখ ও আল আমিন তালুকদার।
বাদী এজাহারে বলেন, তাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কুমারখালীতে। সেখানে তাদের পারিবারিক সম্পত্তি রয়েছে। মামলার বেশিরভাগ আসামি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে সাধারণ মানুষের জমি দখল ও নানা অপরাধে লিপ্ত।
২০১৭ সালের ১ এপ্রিল বাদী তার ছেলে সাইদুর রহমানকে গ্রামের সম্পত্তির খোঁজ-খবর নিতে পিরোজপুর পাঠান। সাইদ সেখানে গেলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি দেয়। পরে সে যশোর ফিরে আসে।
৫ এপ্রিল সাইদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর শহরের পৌর পার্কে ঘুরতে গেলে পুলিশ পরিচয়ে টিএসআই রফিক ও অন্য আসামিরা তাদের তুলে নিয়ে যায়।
বাদীর দাবি, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশেই এ অপহরণ ঘটে।
পরবর্তীতে সাইদের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দেওয়ার পরও তাদের আদালতে হাজির না করে গোপনে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর বাদীর স্ত্রী হিরা বেগম আদালতে মামলা করলে তাকেও তুলে নিয়ে হুমকি ও নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান।
বাদী বলেন, সে সময় আসামিরা রাজনৈতিকভাবে এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে, তারা মুখ খুলতে সাহস পাননি। এখন পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিলন আহমেদ বলেন, আদালত অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।