শিরোনাম

South east bank ad

জলজ সম্পদ রক্ষায় ও নৌ পথ নিরাপত্তায় অদম্য নৌ পুলিশ

 প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২২, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন   |   নৌপুলিশ

জলজ সম্পদ রক্ষায় ও নৌ পথ নিরাপত্তায় অদম্য নৌ পুলিশ
বিডিএফএন লাইভ.কম

পৃথিবীর প্রাচীন মানব সভ্যতা গুলোর ন্যায় বাংলাদেশের মানব সভ্যতাও নদী কেন্দ্রীক। নদীকে কেন্দ্র করেই আমাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ। নদীমাতৃক এই দেশের মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা ও নৌ পথের শৃংখলা বজায় রাখার জন্য ২০১৩ সাল হতেই নৌ পুলিশ বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসছে। 

প্রতি বছর সাধারনত নভেম্বর হতে মে মাস পর্যন্ত নদীতে প্রচুর জাটকা পাওয়া যায়। এ সময়ে যাতে জেলেরা নির্বিচারে জাটকা নিধন করতে না পারে সে জন্য সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জাটকা ধরা নিষিদ্ধ। 

বিশেষত চাঁদপুর ও বরিশালের ০৫ টি অভয়ারণ্যে জাটকা সহ সকল প্রকার মাছ ধরা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ থাকে। 

এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরে গত ১ মার্চ হতে নৌ পুলিশ জাটকা সংরক্ষন অভিযান ২০২২ শুরু করে। এই অভিযানে গত ১ মার্চ হতে ১৫ মার্চ পর্যন্ত নৌ পুলিশ ৪ কোটি ৬৪ লক্ষ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করে যার আনুমানিক মূল্য ১১০ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা, ১১,৭৭১ কেজি জাটকা উদ্ধার করে যার আনুমানিক মূল্য ৩৬ লক্ষ টাকা এবং ১০৯ জন আসামীর বিরুদ্ধে ৫৮ টি মামলা প্রদানসহ ৪৮ টি মাছ ধরার নৌকা/ট্রলার আটক করেছে।

শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নয় বরং জনগনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে অপরাধ দমনের লক্ষ্যে নৌ পুলিশ প্রধান বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার), পিপিএম চাঁদপুরের ষাটনলে এক নৌ র‌্যালি এবং মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন। 

সেখানে তিনি দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মৎস্যজীবি সংগঠন ও জেলে সম্প্রদায়ের সাথে সরকার কর্তৃক ঘোষিত নিষিদ্ধ কালীন সময়ে জাটকা নিধন না করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন ও সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। 

এছাড়াও তিনি মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ঢাকা অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের মৎস্য পেশার সাথে জড়িত বিশিষ্ট জনদের সাথে মতবিনিময় করেন।

নৌপথের শৃংখলা আনয়নের জন্যও নৌ পুলিশ নানামূখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

 রাত্রকালীন সময়ে বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে গত ১ মার্চ হতে ১৫ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে মোট ১০৬ টি বাল্কহেড জব্দ করা হয় এবং ৩৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে ১৮ টি মামলা রুজু করা হয়। 

এছাড়াও বিভিন্ন নৌযান হতে চোরাই তেল উদ্ধারেও নৌ পুলিশ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ দিনে মোট ৪৬১০ লিটার চোরাই তেল উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা।

নদী বাংলাদেশের প্রাণস্বরূপ। নদীর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করলে তা যেমন পরিবেশ দূষণ করে ঠিক তেমনি মৎস্য সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। বানা/ঝোপ নদীর প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং সকল প্রকার জলজ প্রজাতির জন্যও এটি হুমকি স্বরুপ। 

নৌ পুলিশ গত ০১ মার্চ হতে ১৫ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত বানা বা ঝোপ অপসারন অভিযানে মোট ১৩৩ টি বানা বা ঝোপ ধ্বংস করে।

নৌ পথ ব্যবহারকারী মাদক পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নৌ পুলিশ সদা সচেষ্ট। 

এরই ধারাবাহিকতায় নৌ পুলিশ প্রায় ২২ কেজি গাজা উদ্ধার করে যার আনুমানিক মূল্য ৪ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা।

এছাড়াও নৌ পথে সংগঠিত বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সম্প্রতি একটি বিশেষ মনিটরিং সেল স্থাপন করা হয়েছে। 

নৌ পুলিশ নৌ পথে বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। দেশের আপামর জনসাধারনের স্বপ্নের পদ্মা সেতু, বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানে ব্যবহৃত বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রদান এবং  দেশ বিদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের নৌ পথে যাতায়াতের জন্যও নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। 

নৌ পুলিশ প্রধান বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম-বার, পিপিএম বলেন “নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে, বাংলাদেশের অর্থনীতি পূর্নতা পাবে। জনগনের সচেতনতা ও নৌ পুলিশের কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমেই একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন করা সম্ভব হবে। স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।

BBS cable ad

নৌপুলিশ এর আরও খবর: