প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী ৬৯ কর্মকর্তার অপসারণে নিষ্ক্রিয়তা
দেশের প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসর কর্মকর্তাদের অপসারণে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৪২০০ জন কর্মকর্তা বঞ্চনা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে আবেদন করেছেন, যার মধ্যে ১৫৪৬ জনের আবেদন প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কমিটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলেও সরকারি কার্যক্রমে অগ্রগতি আসছে না, যা জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদী দলবাজ কর্মকর্তাদের এখনো অপসারণ করা হয়নি। সংগঠনটি ৩৪ জন বিতর্কিত জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার, ১৬ জন বিতর্কিত কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল এবং ১৯ জন কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
তাদের মতে, এসব কর্মকর্তাদের কারণে প্রশাসনে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং সরকারের কার্যক্রমকে বিভ্রান্ত করছে।
ফোরামের আহ্বায়ক এ বি এম আব্দুস সাত্তারের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ফোরামটি বাংলাদেশের সর্বস্তরের সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে কাজ করছে এবং সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। চিঠিতে দাবি করা হয়, যারা ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত, কারণ তারা সরকারের কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ বি এম আব্দুস সাত্তার আরো বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যারা দলের সুবিধাভোগী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের দ্বারা প্রশাসনে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে, তাই তাদের নিয়োগ বাতিল করা জরুরি।
চিঠিতে ফোরামটির পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ের সুপারিশকৃত নিয়োগ বাতিল করা হোক এবং নতুন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হোক। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বা পদায়ন থেকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের যথাযথ পদায়ন ও পদোন্নতি প্রদানেরও দাবি জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ হস্তক্ষেপ কামনা করি, যেন এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হয় এবং প্রশাসন আবারো গতিশীল ও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ফোরামের দাবির বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে, ফোরাম জানায়, ১৫ বছর ধরে অনেক সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা দলীয় পক্ষপাতদুষ্টদের কারণে পদোন্নতি বা চাকরি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। সংগঠনটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এসব সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের দ্রুত পদায়ন এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনকে সচল করা সম্ভব।