প্রভাবশালীদের দখলে শার্শার কন্যাদাহ বাওড়

বেনাপোল প্রতিনিধি :
যশোরের শার্শার কন্যাদাহ বাওড় নিয়ে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ভয়ভীত দেখিয়ে দূরে সরিয়ে রেখে প্রভাবশালীরা বাওড় পরিচালনা করছেন।
ইফাদ বাংলাদেশ লিমিটেডের সাথে ৫০ বছরের চুক্তি থাকলেও মেয়াদোর্ত্তীণের আগে চুক্তি বাতিল করে দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। এরপর জেলা প্রশাসন টেন্ডার আহ্বান করলে মৎস্যজীবীরা উচ্চ আদালতে মামলা করেন।
ওই মামলার কারণে বাওড়ে মাছ ধরা বন্ধ থাকার নির্দেশনা রয়েছে। তবে এই নির্দেশনার কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বাওড় থেকে মাছ ধরতে না পারলেও বসে নেই প্রভাবশালীরা। তারা প্রায় সময় মাছ ধরে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
বেতনার দুই পাড়ের শ্যামল চন্দ্র, শুশান্ত বিশ্বাস, হরিপদ গাইন ও ভারত বিশ্বাস জানান, আমরা জেলে পরিবার। মাছ ধরা আমাদের পেশা। সেই পেশা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
এখন আগের মত আর খাল বিলে মাছ পাওয়া যায় না। সরকার আমাদের জাল যার জলা তার ঘোষনা দিলেও আমরা প্রভাবশালী লোকের কাছে ধরা। তারা আমাদের জলমহলে নামতে দেননা মাছ ধরতে।
ইতিমধ্যে তারা প্রায় ২০ লাখ টাকার রাণী মাছ আহরণ করেছেন। আর আমরা অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছি। সরকারের কাছে আবেদন এই জলাশয় উন্মুক্ত করে আমাদের মাছ ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে দিক।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, উচ্চ আদালতে তারা একটি মামলা করেন। তবে এখানকার প্রভাবশালী সাবেক এক জনপ্রতিনিধি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মাছ আহরণ করে চলেছেন।
আর তারা বঞ্চিত হচ্ছে মৎস্য শিকার থেকে। সনাতন ধর্মের অধিকাংশ মানুষ এই মাছ ধরা পেশার সাথে জড়িত। মাছ ধরতে না পেরে তারা অসহায়ভাবে মানবতার জীবনযাপন করছেন। এছাড়া ওই অত্যাচারী বাহিনীর নির্যাতনে অনেকে ভারতও চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ভূমি মন্ত্রনালয়ের সাথে মৎস্য অধিদপ্তরের ৫০ বছরের চুক্তি ছিল।
ভূমি মন্ত্রনালয়ের সাথে মৎস্য অধিদপ্তরের আর চুক্তি না হওয়ায় ইফাদ বাংলাদেশ লিমিটেডের সাথে আর কোন চুক্তি মৎস্য অধিদপ্তরের হয়নি। ওখানকার সুফলভোগীরা উচ্চ আদালতে একটি মামলা করেছেন বলে জেনেছি। আমাদের সাথে বর্তমানে ওই বাওড়ের কোন সর্ম্পক্ততা নেই।
এ ব্যাপারে উলাশী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, যারা জোর করে জবর দখল করে খাচ্ছে, এটা আর হবে না। আমরা চাচ্ছি যাদের এটা প্রাপ্য তারা এটা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করুক।
এ বিষয় আমার উপজেলা মৎস্য অফিসারের সাথেও কয়েক দফায় আলাপ হয়েছে। আমাদের আর কোন চাওয়া পাওয়া নেই। একটাই চাওয়া যারা প্রকৃত জেলে পেশার লোক তারা এটা ভোগ দখল করে খাবে। সেই ভাবে আমরা কাজ করব।