South east bank ad

ভাড়া পরিশোধ না করায় গৌরীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিলেন পাষন্ড বাড়ি মালিক !

 প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:১৭ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ

ভাড়া পরিশোধ না করায় গৌরীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিলেন পাষন্ড বাড়ি মালিক !

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :

করোনাকালে ভাড়া পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছিলেন স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক। এর মধ্যে মনগড়াভাবে ভাড়া বাড়িয়ে করে তা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন বাড়ির মালিক। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে দেন দরবারে ভাড়া পরিশোধের জন্য সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু দরবারের এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভাড়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেন বাসার মালিক স্থানীয় জুলহাস উদ্দিন রতন। রবিবার (১২ জুলাই) ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভার পূর্ব দাপুনিয়া এলাকায় ডি.কে.বি কিন্ডারগার্টেনে এ নিন্দনীয় ঘটনাটি ঘটে। এতে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে পাষন্ড বাড়ি মালিকের এমন অমানবিক আচরনে স্থানীয় জনমনে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্কুলটির পরিচালক শাহজাহান কবীর হীরা। 

শাহজাহান কবির হীরা জানান, পঞ্চাশ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ৫ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া প্রদানের মৌখিক চুক্তিতে ২০১৭ সাল থেকে পূর্ব দাপুনিয়া এলাকায় জুলহাস উদ্দিন রতনের দু'তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার চারটি কক্ষে কিন্ডারগার্টেন পরিচালনা করে আসছেন তিনি। বাড়িটি ভাড়া নেয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিত মাসিক ভাড়া পরিশোধ করে আসছিলেন। করোনাকালে লকডাউনে সরকারি নির্দেশনায় স্কুল বন্ধ থাকায় কয়েক মাসের ভাড়ার টাকা বকেয়া পড়ে যায়। এর মধ্যে বাড়ির মালিক মনগড়াভাবে মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করে সমস্ত টাকা পরিশোধের জন্য তাকে চাপ দেন। এতে উভয় পক্ষের মাঝে বিরোধ দেখা দিলে বাড়ির মালিক গত আগস্ট মাসে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালে এ নিয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সালিশ দরবার বসে। এ সালিশ দরবারে উভয় পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে প্রতিমাসের নিয়মিত ভাড়া বকেয়া ভাড়া এক মাস করে পরিশোধ করা হবে এই শর্তে তালা খুলে দেয়া হয়।
এদিকে কয়েকদিন যেতে না যেতেই দরবারের এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে  স্কুল খোলার প্রথমদিন দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন বাড়ির মালিক। রবিবার সকালে স্কুলের দরজায় তালা ঝুলানো দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবগণ।

তিনি বলেন, জুলহাসের বাড়িতে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২ লাখ টাকার শিক্ষা উপকরন তালাবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
 
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক জুলহাস উদ্দিন রতন সাংবাদিকদের জানান, শাহজাহান কবির হীরার কাছে দুই বছরের ভাড়া বকেয়া আছে। বার বার তাগিদ দেয়ার পরও ভাড়া পরিশোধ করেনি তিনি। এজন্য স্কুলে তালা ঝুলিয়েছেন তিনি।

গৌরীপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহম্মেদ জানান, করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক ও শিক্ষকদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়েছে। এসময়ে কোন আয় না থাকায় কিন্ডারগার্টেনগুলোর ভাড়া বকেয়া পড়ে যায়। এক্ষেত্রে স্থানীয় বাড়ির মালিকগন মানবিক দিক বিবেচনা করে কিন্ডারগার্টেন পরিচালকদের কোন চাপ প্রয়োগ না করে ঘটনাটি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু  ডি.কে.বি কিন্ডারগার্টেনের পরিচালককে বাড়ি ভাড়া পরিশোধের কোন সময় না দিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়ার কাজটি অমানবিক। ঘটনাটি দ্রুত সমাধান না হলে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করা হবে বলে তিনি জানান। 

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এখন স্কুল খোলা হয়েছে। এ অবস্থায় ওই কিন্ডারগার্টেনের পরিচালককে কোন সময় না দিয়ে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেয়াটা অমানবিক। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন বলে তিনি জানান।

BBS cable ad