South east bank ad

ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু

 প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:০৯ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ

ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু


ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

 করোনায় দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইদ আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান সরকারী নিয়মে দিক নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। 
সকাল ১০টায় ঝালকাঠি সরকারী কলেজে স্বতস্ফুর্তভাবে  উপস্থিতিতে যেন তাদের মধ্য দেড় বছরের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেন মহা আনন্দের বন্যা বয়েছে। শ্রেণিক্ষের বাইরে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করলেও কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইলিয়াস ব্যাপারীর কঠোর নির্দেশনায় শ্রেণিকক্ষে ছিলো সরকারী নিয়মানুয়ী নিরাপদ দূরত্বে। 

দেড় বছর পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শুধু সরকারী কলেজই না, সরকারী মহিলা কলেজ, আকলিমা-মোয়াজ্জেম মহাবিদ্যালয়, সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসাসহ জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পাঠাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে সরকারী নিয়মানুযায়ী জেলা ও উপজেলা শহরে শতভাগ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যথাযথ ব্যবস্থা করলেও প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়ায় শিক্ষার্থীরা তা ব্যবহার করতে পারেনি। 

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় সব প্রস্তুতির মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের ব্যাপারে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের মাঠ থেকে শুরু করে ব্র্রেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল পরিস্কার করে ঝকঝকে করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় সবচেয়ে বেশি আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেক অভিভাবকই তার সন্তানকে নিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়ে পৌছে দিয়েছেন।

বিকনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমার প্রায় ২৭ বছরের চাকরি জীবনে এ রকম ছুটি আগে পাইনি। স্কুল বন্ধ থাকায় খারাপ লেগেছিলো। সব সময় স্কুল খোলার অপেক্ষায় ছিলাম। স্কুল খোলার ঘোষণায় স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিলো। 

ঝালকাঠি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইলিয়াস ব্যাপারী জানান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও কলেজে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। সবার মধ্যেই অন্যরকম একটা আনন্দের অনুভূতি লক্ষ্য করা গেছে। 

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী মনিষা আক্তার, রাবেয়া বসরি, হাবিবা জানায়, কলেজ খুলছে, আমরা অনেক খুশি। আবারো প্রিয় কলেজ আমাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে। 

ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. হুমায়ুন কবীরের বাবা মো. আলী জিন্নাহ বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। লেখাপড়ায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এ থেকে উত্তরণে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের বাড়তি যত্ন নেওয়া হয়েছে। 
ঝালকাঠি জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, ঝালকাঠি জেলায় ১৮টি কলেজ, ০৯টি কারিগরি কলেজ, ১৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৬টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়  রয়েছে। এছাড়া এ জেলায় ১২৩টি মাদ্রাসা রয়েছে; যার মধ্যে ১টি কামিল, ১৫টি ফাযিল, ১৩টি আলিম ও ৯৪টি দাখিল মাদ্রাসা। ঝালকাঠি জেলায় সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৪৬টি। এছাড়া এ জেলায় ৩টি শিশু কল্যাণ প্রাঃ বিঃ রয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলায় সরকারী নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য উপকরণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে তারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।  

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে সব সময় নজরদারী করা হচ্ছে।

BBS cable ad