South east bank ad

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

 প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২১, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন   |   নৌবাহিনী

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামস্থ বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে আজ রবিবার (২৭-০৬-২০২১) মিডশীপম্যান ২০১৮/বি ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার (ডিইও) ২০২১/এ ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মনোজ্ঞ এ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০১৮/বি ব্যাচের ৪৭জন মিডশীপম্যান এবং ২০২১/এ ব্যাচের ১৮জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ সর্বমোট ৬৫জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৯জন মহিলা কর্মকর্তা রয়েছেন। 

সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশীপম্যান ২০১৮/বি ব্যাচের সাইফ খান বিজন সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকস মিডশীপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। এছাড়া মিডশীপম্যান মোঃ আবুল কাশেম প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণ পদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২১/এ ব্যাচ হতে এ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট মোঃ মেহেদী হাসান তুহিন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন। পরে নবীন কর্মকর্তাগণ আনুষ্ঠানিভাবে শপথ গ্রহণ করেন এবং তাদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়।

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনী প্রধান তাঁর ভাষণে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষের এই বিশেষক্ষণে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। সেইসাথে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য প্রজ্ঞায় বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছা ও পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। 

নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে ইতিমধ্যে বর্তমান সরকারের গৃহিত বহুমুখী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে নৌপ্রধান বলেন, গত প্রায় এক দশকে নৌবহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফটসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে এবং সম্প্রতি নতুন ছয়টি যুদ্ধজাহাজ নৌবহরে কমিশনিং করা হয়েছে। সেইসাথে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও উন্নততর জাহাজ এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন ঘাঁটিসমূহের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড ও শীপইয়ার্ডগুলোর আধুনিকায়নের কাজও চলমান রয়েছে। 

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়োচিত বিভিন্ন কর্মসূচীর কারণে এখন পর্যন্ত অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি নৌসদস্যদের জন্য টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগময় এ পরিস্থিতির মধ্যে নবীন কর্মকর্তাগণ তাদের মনোবল অক্ষুণ্ন রেখে যে উন্নত প্রশিক্ষণ ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে নৌপ্রধান তার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। নৌপ্রধান একইসাথে কঠোর এ প্রশিক্ষণ প্রদানে যেসকল কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও নৌসদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আজকের নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেইসাথে সশস্ত্র বাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসেবে দেশপ্রেম ও শৃঙ্খলাবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহবান জানান। পরিশেষে নৌপ্রধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন কর্মকর্তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করার পরামর্শ দেন। 

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
BBS cable ad

নৌবাহিনী এর আরও খবর: