শুরু হচ্ছে জি-২০ সম্মেলন
বিশ্বের ধনী ও উন্নয়নশীল দেশের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ শনিবার (৩০ অক্টোবর)। এবারের সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী ইস্যু গুরুত্ব পাচ্ছে।
এরই মধ্যে ইতালির রোমে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যুক্ত থাকছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তা দিতে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের
করোনা ভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর এই প্রথম সরাসরি অংশগ্রহনের মাধ্যমে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ব নেতাদের সম্মেলনের আগে জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা শুক্রবার আলোচনা করেছেন কিভাবে করোনা মহামারী এবং অর্থনৈতিক দূরাবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়। অর্থমন্ত্রীরা রোমে সরাসরি বৈঠক করলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা করেছেন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে।
জি-২ ব্লকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত এবং জার্মানির মতো দেশ আছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশই এই দেশগুলোর এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এদের ৮০ শতাংশ অবদান রয়েছে। এবারের সম্মেলনে হতাশাও আছে। কারণ চীন, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলো সম্মেলনে সরাসরি অংশ নিচ্ছে না।
এবারের সম্মেলনে জলবায়ু ইস্যু বিশেষ করে কয়লা থেকে স্বচ্ছ জ্বালানির দিকে কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। জ্বালানির মূল্য কমানো এবং সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা যা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে সেটাও গুরুত্ব পাবে সম্মেলনে। বিশ্ব নেতাদের এই সম্মেলনে বড় বড় কোম্পানির জন্য ন্যুনতম ১৫ শতাংশ কর আরোপের বিষয়ে একটি চুক্তি হচ্ছে। চলতি মাসেই চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বাংলাদেশ সময় সোমবার থেকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬ শুরু হচ্ছে। তবে তার আগেই জি-২০ সম্মেলনে জলবায়ু ইস্যু গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ বিশ্বের কার্বন নি:সরণের ৮০ শতাংশ এই ব্লকের দেশ থেকে হয়। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা বিশ্বের তাপমাত্রা এক দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। তবে এবারের সম্মেলনে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অপরদিকে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুক্রবার ভ্যাটিকানে ক্যাথিলক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কে রোমে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন ও স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত শীর্ষ সম্মেলনের আগে এই সাক্ষািটকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সাক্ষাৎ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাইডেন পোপ ফ্রান্সিসের কাছ থেকে পবিত্র কমিউনিয়ন নেবেন কি না সেই বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এই বিষয়টি সংবেদনশীল বলে মনে করা হয়। অনেকে দাবি করেন, একজন ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট যিনি গর্ভপাত সমর্থন করেন তিনি এই পবিত্র কমিউনিয়ন পেতে পারেন না।
এর আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের সাবমেরিন সংক্রান্ত চুক্তির পর ফ্রান্সের সঙ্গে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপরই প্রথম প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর মধ্যে সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।