শান্ত-সংযমী পুলিশ বাহিনী
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে এখন প্রায় সারা দেশেই সংযমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিচ্ছিন্ন কিছু স্থানে সংঘর্ষ বা গুলি-টিয়ারশেল ব্যবহারের খবর জানা গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে পুলিশ সদস্যরা।
এমনকি কয়েকটি এলাকায় পুলিশ সদস্যরা নিজেরা গুরুতর হামলার শিকার, এমনকি হত্যার শিকার হলেও সেখানে গুলি চালাননি। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এক শিশু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে বারবার দুই হাতে আঘাত করছিল, আর ওই পুলিশ সদস্য বিষয়টি সহজভাবে সহ্য করছিলেন এমন দৃশ্যও ভাইরাল হয়। গত কয়েক দিনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এমন অবস্থা দেখছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, চলমান আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা মারাত্মকভাবে টার্গেট, হামলা ও হত্যার শিকার হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেপথ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়িয়ে এসব ঘটনা ঘটানো হয়। পুলিশও অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ কেবল জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে বাধ্য হচ্ছে কঠোর হতে। তা ছাড়া পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বিরোধ নেই। তাই মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ধৈর্যশীলতার সঙ্গে পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, পুলিশ সবসময় শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকে এবং থাকতে চায়। যখন জনজীবন ও জানমাল হুমকির মুখে পড়ে তখনই পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে থাকে। তা ছাড়া পুলিশ সবসময়ই শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকে বা আছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার বিকালে খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার এলাকায় আন্দোলনকারীরা সুমন কুমার ঘরামী নামে একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে। একই স্থানে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এদিকে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারীরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জমায়েত হয়। রাজধানীতে শনিবার সারা দিন বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের সতর্ক অবস্থা দেখা গেলেও শান্ত-সংযমী হয়ে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ। তাদের ওপর আঘাত এলেও তারা পাল্টা জবাব না দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেন। রাজধানীতে শনিবার পুলিশ সংক্রান্ত দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তার একটিতে দেখা যায়, পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে উঠে আন্দোলনকারীরা সাঁজোয়া যানের গ্লাস লাল রঙের স্প্রে দিয়ে রং করে তার ওপরেই উল্লাস করছে। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছিত করতে দেখা যায়। অন্য ভিডিওতে এক শিশুকে দেখা যায় পুলিশ সদস্যকে আঘাত করছে। তবে ওই পুলিশ সদস্য হাসিমুখে সেটি মেনে নেন।
এদিকে শনিবার গাজীপুর শ্রীপুরে মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারী ছাত্ররা মাওনা-শ্রীপুর আঞ্চলিক সড়কের বকুলতলায় অবস্থিত মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা হাইওয়ে থানার সীমানা প্রাচীরের ভেতর থাকা হাইওয়ে থানার রেকার (বিকল গাড়ি সরানোর গাড়ি), টহলের কাজে ব্যবহৃত পুলিশ ভ্যানে আগুন দেয়। তিন তলা ভবনের বেশ কয়েকটি কক্ষেও আগুন দেওয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
বরিশালে শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে প্রথমে সরকারি বিএম কলেজ ও পরবর্তীতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে নগরীর চৌমাথা এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ শেষে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলে কর্মসূচির শেষের দিকে হঠাৎ পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যদের খাবার বহনকারী একটি পিকআপ ভাঙচুর করে। পার্শ্ববর্তী ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা দৌড়ে পার্শ্ববর্তী মারকাজ মসজিদে আশ্রয় নিলেও ৪ এপিবিএন সদস্য আটকা পড়ে। পরে তাদের মারধর করে পোশাক খুলে রাখা হয় এবং তাদের পোশাক সড়কের ওপরে বিদ্যুতের লাইনে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আহত এপিবিএন সদস্যরা হচ্ছেনÑএসআই নেয়ামত খান, কনস্টেবল সিফাত, হাসনাত ও রিয়াজ। এর আগেও আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা ঘটে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তাদিল রহমান নামে এক ছাত্র বলেন, কোতোয়ালি, রাইফেল ক্লাব, সিটি কলেজ, স্টেশন রোড সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে আমরা নিউমার্কেট এলাকায় জড়ো হই। পুলিশ কোথাও আমাদের বাধা দেয়নি। সিএমপির এডিসি (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দৃশ্যমান না হলেও নিরাপদ দূরত্বে থেকে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করছে পুলিশের সদস্যরা।
নোয়াখালীতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে। তবে নোয়াখালীতেও পুলিশ ছিল শান্তিপূর্ণ অবস্থানে। নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় গুলির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, শনিবার বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ চলাকালীন দুর্বৃত্তকারীদের মধ্য থেকে কেউ সুধারাম মডেল থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এ সময় বিভিন্ন দিক থেকে দুর্বৃত্তকারীরা থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও থানা বিল্ডিংয়ের জানালার কাচ ভেঙে চৌচির হয়ে যাওয়াসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়।
রাজশাহীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে তিনটি পুলিশ বক্সসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিনটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও আন্দোলনকারীদের ওপর কোনো ধরনের অ্যাকশন বা মিছিলে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
এ সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর মহানগরীর শহিদ কামারুজ্জামান চত্বরে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ সমন্বয়ক রাফিন হাসান অর্ণবকেও পিটিয়ে আহত করাসহ সংবাদকর্মীকেও লাঞ্ছিত করা হয়। মহানগরীর বিন্দুর মোড় রেলগেট শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে পাশেই রেললাইনের কাছে রেলওয়ের গার্ডরুমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ও রাস্তার ওপর ট্রায়ার, কাঠের খড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে শহিদ কামারুজ্জামান চত্বরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জাতীয় নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতি ফলকে থাকা ছবি ভাঙচুর ও বিকৃতি ঘটান এবং পাশের থাকা স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে (ল্যান্ডমার্ক) নানা ধরনের খারাপ মন্তব্য লেখেন।
এমনকি কয়েকটি এলাকায় পুলিশ সদস্যরা নিজেরা গুরুতর হামলার শিকার, এমনকি হত্যার শিকার হলেও সেখানে গুলি চালাননি। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এক শিশু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে বারবার দুই হাতে আঘাত করছিল, আর ওই পুলিশ সদস্য বিষয়টি সহজভাবে সহ্য করছিলেন এমন দৃশ্যও ভাইরাল হয়। গত কয়েক দিনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এমন অবস্থা দেখছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, চলমান আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা মারাত্মকভাবে টার্গেট, হামলা ও হত্যার শিকার হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেপথ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়িয়ে এসব ঘটনা ঘটানো হয়। পুলিশও অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ কেবল জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে বাধ্য হচ্ছে কঠোর হতে। তা ছাড়া পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বিরোধ নেই। তাই মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ধৈর্যশীলতার সঙ্গে পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, পুলিশ সবসময় শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকে এবং থাকতে চায়। যখন জনজীবন ও জানমাল হুমকির মুখে পড়ে তখনই পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে থাকে। তা ছাড়া পুলিশ সবসময়ই শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকে বা আছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার বিকালে খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার এলাকায় আন্দোলনকারীরা সুমন কুমার ঘরামী নামে একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে। একই স্থানে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এদিকে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারীরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জমায়েত হয়। রাজধানীতে শনিবার সারা দিন বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের সতর্ক অবস্থা দেখা গেলেও শান্ত-সংযমী হয়ে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ। তাদের ওপর আঘাত এলেও তারা পাল্টা জবাব না দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেন। রাজধানীতে শনিবার পুলিশ সংক্রান্ত দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তার একটিতে দেখা যায়, পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে উঠে আন্দোলনকারীরা সাঁজোয়া যানের গ্লাস লাল রঙের স্প্রে দিয়ে রং করে তার ওপরেই উল্লাস করছে। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছিত করতে দেখা যায়। অন্য ভিডিওতে এক শিশুকে দেখা যায় পুলিশ সদস্যকে আঘাত করছে। তবে ওই পুলিশ সদস্য হাসিমুখে সেটি মেনে নেন।
এদিকে শনিবার গাজীপুর শ্রীপুরে মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারী ছাত্ররা মাওনা-শ্রীপুর আঞ্চলিক সড়কের বকুলতলায় অবস্থিত মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা হাইওয়ে থানার সীমানা প্রাচীরের ভেতর থাকা হাইওয়ে থানার রেকার (বিকল গাড়ি সরানোর গাড়ি), টহলের কাজে ব্যবহৃত পুলিশ ভ্যানে আগুন দেয়। তিন তলা ভবনের বেশ কয়েকটি কক্ষেও আগুন দেওয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
বরিশালে শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে প্রথমে সরকারি বিএম কলেজ ও পরবর্তীতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে নগরীর চৌমাথা এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ শেষে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলে কর্মসূচির শেষের দিকে হঠাৎ পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যদের খাবার বহনকারী একটি পিকআপ ভাঙচুর করে। পার্শ্ববর্তী ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা দৌড়ে পার্শ্ববর্তী মারকাজ মসজিদে আশ্রয় নিলেও ৪ এপিবিএন সদস্য আটকা পড়ে। পরে তাদের মারধর করে পোশাক খুলে রাখা হয় এবং তাদের পোশাক সড়কের ওপরে বিদ্যুতের লাইনে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আহত এপিবিএন সদস্যরা হচ্ছেনÑএসআই নেয়ামত খান, কনস্টেবল সিফাত, হাসনাত ও রিয়াজ। এর আগেও আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা ঘটে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তাদিল রহমান নামে এক ছাত্র বলেন, কোতোয়ালি, রাইফেল ক্লাব, সিটি কলেজ, স্টেশন রোড সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে আমরা নিউমার্কেট এলাকায় জড়ো হই। পুলিশ কোথাও আমাদের বাধা দেয়নি। সিএমপির এডিসি (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দৃশ্যমান না হলেও নিরাপদ দূরত্বে থেকে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করছে পুলিশের সদস্যরা।
নোয়াখালীতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে। তবে নোয়াখালীতেও পুলিশ ছিল শান্তিপূর্ণ অবস্থানে। নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় গুলির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, শনিবার বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ চলাকালীন দুর্বৃত্তকারীদের মধ্য থেকে কেউ সুধারাম মডেল থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এ সময় বিভিন্ন দিক থেকে দুর্বৃত্তকারীরা থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও থানা বিল্ডিংয়ের জানালার কাচ ভেঙে চৌচির হয়ে যাওয়াসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়।
রাজশাহীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে তিনটি পুলিশ বক্সসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিনটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও আন্দোলনকারীদের ওপর কোনো ধরনের অ্যাকশন বা মিছিলে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
এ সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর মহানগরীর শহিদ কামারুজ্জামান চত্বরে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ সমন্বয়ক রাফিন হাসান অর্ণবকেও পিটিয়ে আহত করাসহ সংবাদকর্মীকেও লাঞ্ছিত করা হয়। মহানগরীর বিন্দুর মোড় রেলগেট শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে পাশেই রেললাইনের কাছে রেলওয়ের গার্ডরুমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ও রাস্তার ওপর ট্রায়ার, কাঠের খড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে শহিদ কামারুজ্জামান চত্বরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জাতীয় নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতি ফলকে থাকা ছবি ভাঙচুর ও বিকৃতি ঘটান এবং পাশের থাকা স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে (ল্যান্ডমার্ক) নানা ধরনের খারাপ মন্তব্য লেখেন।