South east bank ad

২৪ মার্চ ১৯৭১: ‘বরদাশত করা হবে না’, হুঁশিয়ারি মুজিবের

 প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ০৩:০৮ অপরাহ্ন   |   দেশ

২৪ মার্চ ১৯৭১: ‘বরদাশত করা হবে না’, হুঁশিয়ারি মুজিবের
বিডিএফএন লাইভ.কম

একাত্তরের এদিনেই সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবাঙালিদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা কমপক্ষে তিনশ বাঙালিকে হত্যা করে।

মিরপুরে অবাঙালিরা বাঙালিদের বাড়িতে ওড়ানো বাংলাদেশের পতাকা ও কালো পতাকা জোর করে নামিয়ে দেয়। রাতে ওই এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করে। 

এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সমাগত মিছিলকারীদের উদ্দেশে বিরামহীন ভাষণ দেন শেখ মুজিব। সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “বাংলার জনগণের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে তা বরদাশত করা হবে না।”

সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগ ও সরকারের মধ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে তাজউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আলোচনা অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না। আওয়ামী লীগ আলোচনা আর দীর্ঘ করতে রাজি নয়।

২৩ মার্চ রাত থেকে ২৪ মার্চ সকাল পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনী সৈয়দপুর সেনানিবাসের পাশের এলাকা বোতলগাড়ী, গোলাহাট ও কুন্দুল গ্রাম ঘেরাও করে অবাঙালিদের সঙ্গে নিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে একশজন নিহত এবং এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়।

রংপুর হাসপাতালের সামনে ক্ষুব্ধ জনতা ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানি সেনারা সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় নিরস্ত্র অধিবাসীদের ওপর বেপরোয়া গুলি চালায়। তাতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়।

চট্টগ্রামে পাকিস্তানিরা সেনারা নৌবন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে সোয়াত জাহাজ থেকে সমরাস্ত্র খালাস করতে গেলে স্থানীয় বাঙালিরা তাদের ঘিরে ফেলে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাহাজ থেকে কিছু অস্ত্র নিজেরাই খালাস করে ১২টি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতা পথরোধ করে। সেনাবাহিনী ব্যারিকেড দেওয়া জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে শতাধিক শ্রমিক শহীদ হন।

ঢাকা টিভি কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সৈন্যরা টিভিকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে সন্ধ্যা থেকে ঢাকা টিভির কর্মীরা সব ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার থেকে বিরত থাকেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র গণবিপ্লবকে আরও জোরদারে জনগণের প্রতি আহ্বান জানায়।

পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের সদরদপ্তর যশোরে বাঙালি অফিসাররা স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত পতাকা উত্তোলন করেন। ভোলা ও বগুড়ায়ও রাইফেলসের জওয়ানরা নিজ নিজ ছাউনিতে বাংলাদেশের পতাকা তোলেন।

চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাঙালি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার এম আর মজুমদারকে ঢাকায় বদলি করে সেখানে ব্রিগেডিয়ার আনসারীকে কমান্ডার নিযুক্ত করে।

এদিন মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী কুমিল্লা ও যশোর সেনানিবাস সফর এবং ব্রিগেড কমান্ডারদের সাথে বৈঠক করেন।

ঢাকায় অবস্থানরত কাউন্সিলস মুসলিম লীগ, কাইয়ুম মুসলিম লীগসহ পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৭ নেতা এদিন আকস্মিকভাবে করাচি রওনা দেন।

এদিনও প্রেসিডেন্ট ভবনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরে ভুট্টো বলেন, বাংলার জনগণের জন্য তার সহমর্মিতা আছে। কিন্তু তার জাতীয় দায়িত্বও রয়েছে। 
BBS cable ad