South east bank ad

বাল্যবিয়ের পিড়িতেই শেষ দেড় হাজার শিক্ষার্থীর পড়ালেখা

 প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২২, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

বাল্যবিয়ের পিড়িতেই শেষ দেড় হাজার শিক্ষার্থীর পড়ালেখা
এম, নুরুন্নবী, (ভোলা):

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় বাল্য বিবাহের কারনে প্রায় দেড় হাজার কন্যা শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেনা। করোনা কালীন সময়ে দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই এলাকায় বাল্যবিয়ের হিড়িক পড়ে। ফলে বাল্যবিয়ের পিড়িতেই শেষ দেড় হাজার শিক্ষার্থীর পড়ালেখা।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, উপজেলার ৩০টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় দেড় হাজার ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়ে গেছে। এদের অধিকাংশের বয়স ১০ থেকে ১৬ বছর। এসব শিশুদের এক শ্রেনির অসচেতন অভিভাবকরা জোড় করে বিয়ে দিয়ে দেন সুবিধা জনক পাত্রের সাথে।  

যারা বর্তমানে শ্বশুড় বাড়িতে থাকায় স্কুলে আসছেনা। কেউ কেউ আবার সন্তান-সন্ততি নিয়ে স্কুলের কথা ভুলেই গেছে। আর অনেকেই বাল্য বিয়ে ও যৌতুকের যাতাকলে পরে অসহনীয় দিন কাটাচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানগন আরো জানান, বাংলাবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩২, চাদঁপুর মহিলা আলিম মাদ্রাসার ৮০ জন, ফারজানা চৌধুরী বালিকা বিদ্যালয়ের ৪০জন, শিবপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ৭৫ জন, চাঁচড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩০ জন, পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে গত দেড় বছরে। সব মিলিয়ে ৩০টি স্কুল-মাদ্রাসার প্রায় ১৫ শত ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে।

উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে খোজ নিয়ে জানা গেছে,  ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রীর অভিভাবকরা স্কুলে দেয়া তথ্য গোগন রেখে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও ইউপি সচিবের সহযোগীতায় বয়স বাড়িয়ে জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করে গোপনে কাজী ডেকে বাল্য বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। 

এসব কর্ম সম্পাদনের জন্য উপজেলা ব্যাপী রয়েছে একদল ভুয়া কাজী। এমনকি অভিভাবকরা ধুমধাম করে আয়োজন করেন বিয়ের অনুষ্ঠান। কোন কোন অনুষ্ঠানে প্রশাসন হানা দিলেও গোপনে আগে বিয়ে সম্পন্ন  হয়ে যাওয়ায় দেখা যায় আইনী শিথিলতা। প্রতিটি ইউপির কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থের বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করে। এসব কাগজ যাচাই-বাচাই না করেই এক শ্রেণির চুক্তিভিত্তিক কাজী (মুল কাজীর সহকারী) বিয়ের ব্যবস্থা করেন।

এদিকে বাল্যবিয়ে নিয়ে উপজেলায় কাজ করা এনজিও গুলোর নেই তেমন তৎপরতা। কাগজে কলমে দুই একটি অনুষ্ঠান দেখিয়ে এনজিও গুলো সন্তুষ্ট  রাখছেন  দাতাদের। এ উপজেলায় প্রায় ৩২ টি বে-সরকারী সংস্থা কাজ করলেও বাল্যবিয়ে নিয়ে কারো কার্যক্রম চোখে পরেনা। শুধুমাত্র সুশীলন নামের একটি এনজিও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে স্কুলভিত্তিক কিছু কাজ সম্পাদন করে থাকে।

এবিষয়ে সুশীলনের কো-অর্ডিনেটর সুরোজ মিয়া জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩০ টি প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বাল্যবিয়ে নিয়ে সচেতন করি। প্রায় ১২০ জন শিক্ষককে এ বিষয়ে আমরা প্রশিক্ষন করিয়েছি। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমরা ছাত্রীদের ক্যারাতে প্রশিক্ষন দিচ্ছি।   

উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা  রামেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, অধিকাংশ বাল্য বিয়ে অভিভাবকরা গোপন রাখে। এর সঠিক সংখ্যা জানা নেই। আমরা সংবাদ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার চেস্টা করি।

 জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা কাজ করছে। বয়সের কোন প্রমানক ছাড়া ইউপি থেকে কোন ভাবেই বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ প্রদানের সুযোগ নেই। এমন কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 
BBS cable ad