সরকারী বিনামূল্যের বই বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক সুপারকে আটক করেছে এলাকাবাসী

ত্রিশাল প্রতিনিধি
২০২১ ও ২২ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বই বিক্রির সময় মাদরাসার সুপারকে আটক করে এলাকাবাসী। এসময় গোডাউনে তালা লাগিয়ে সুপার পালিয়ে গেলে এলাকাবাসী ওই গোডাউনে আরেকটি তালা লাগিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়। এ ঘটনায় মাদরাসার সুপারকে শোকজ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আনাম।
জানাযায়, গত শনিবার পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মাদরাসা বন্ধের দিন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হদ্দেরভিটা দাখিল মাদরাসার (ভারপ্রাপ্ত) সুপার আয়্যুব আলীর নির্দেশে দপ্তরী ২০২১ ও ২২ সালের ৫ বস্তা বই কেজি ধরে বিক্রি করার সময় হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। এসময় এলাকাবাসীর তোপের মুখে বই বিক্রি বন্ধ করে গোডাউনে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় সুপার। ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী গোডাউনে আরেক তালা লাগিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালে সোববার ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেলে জব্দ তালিকা করে বইসহ গোডাউনটি সিলগালা করে দেন। এসময় ২০২১ সালের বিভিন্ন শ্রেনী প্রায় দুই হাজার ও ২২ সালের শতাধিক বই বিক্রির জন্য বস্তাবন্দি করলে এগুলোসহ গোডাউন থেকে ২০২২ সালের প্রায় দুই হাজার বই জব্দ করা হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রহমান আনাম জানান, আমাদের পুরাতন বই বিক্রির একটা নিয়ম আছে। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এ বছর ২০১৯ সাল পর্যন্ত পরিত্যক্ত বই বিক্রি করতে পারব। তবে সুপার যে কাজ করেছে তা দুঃখজনক। এমনকি বর্তমান সালের প্রায় দুই হাজার বই গোডাউনে পরে রয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার তাকে শোকজন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। তার জবারের পর আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করব।
মাদরাসার দপ্তরী ফারুক হোসেন জানান, শনিবার সকালে মাদরাসায় এসে আমাদেরকে বই বস্তাবন্ধি করে মাপামাপি করতে বলেন সুপার হুজুর। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বইগুলো বেড়ে গেছে তাই বিক্রি করে দেব। এজন্য আমরা ৫বস্তা বই বিক্রির জন্য রেডি করি।
স্থানীয় নাজিম উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ও ফরহাদ হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে দাড়িপাল্লা নিয়ে বস্তা ভর্তি বই মাপার সময় আমরা জিজ্ঞেস করলে সুপার বলেন, বই উপজেলা সদরে পাঠাচ্ছি। কিন্তু উপজেলা সদরে খোজ নিয়ে যখন জানতে পারি সেখানে পাঠানো হচ্ছেনা তখন দপ্তরী আমাদের বলেন, সুপার বইগুলো চুরি করে বিক্রি করে দিচ্ছে। তখন আমরা বাধা দিলে গোডাউনে তালা লাগিয়ে মোবাইল কানে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আমরা গোডাউনে আরেকটি তালা লাগিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দেয়।
জানতে চাইলে সুপার (ভারপ্রাপ্ত) আয়্যুব আলী বলেন, আমি বই বিক্রির জন্য বস্তাবন্ধী করিনি বরং বইগুলো অন্যত্র রাখার জন্য গুছাচ্ছিলাম। ২২ সালের এত বই প্রসঙ্গে তিনি বলেন করোনার জন্য বই বিতরন করা হয়নি, এজন্যই এত বই ষ্টকে রয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা বই বিতরন কমিটির সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বলেছি এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন। সুপারকে শোকজের জবাব দেয়ার পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।