South east bank ad

১৬৯টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততা

 প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:২৭ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ

১৬৯টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততা
মোঃ রাজু খান, (ঝালকাঠি) :

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে ঝালকাঠির ১৬৯টি মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির দ্বিতীয় পর্বের কাজ। কাঠের উপরে খড়কুটা মুড়িয়ে প্রাথমিক মাটির প্রলেপের কাজ শেষে এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের অবয়ব তৈরীর কাজ চলছে। তা শেষ হলে শুকানোর সাথে সাথে শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে পুর্ণাঙ্গ রূপে মূর্ত হয়ে উঠবে দেবীর রূপ।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার ও গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঝালকাঠিতে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। আর এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এদিকে জেলার হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠীতে শুরু হবে দুর্গা পূজা। দশমীপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ১৫অক্টোবর দুর্গা উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

জেলার বিভিন্ন দুর্গামন্দির ঘুরে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক প্রথম পর্বের কাজ প্রায় শেষের দিকে। জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির তথ্যমতে, এবার জেলার ১৬৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

কথা হয় শহরের পাবলিক হরিসভায় কর্মরত প্রতিমাশিল্পীদের সঙ্গে। তারা ৪জনের একটি টিম প্রতিবছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির ফরমাশ নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। 

 পঞ্জিকামতে এবার দেবী দুর্গা আসবেক ঘটকে আর যাবেন দোলায় চড়ে। এবছর দেবী দুর্গার কাছে বিশ্ব মহামারি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। 

প্রতিমা তৈরীর কারিগর ভাস্কর শ্রীবাস গাইন জানান, প্রথমে কাঠের উপরে খড়কুটা দিয়ে ভ্যালা তৈরী করে প্রতিমা প্রস্তুত করি। এর উপরে মামাটির প্রলেপ দিয়ে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করেছি। পরবর্তি কাজ সম্পন্ন করে আগামী ২০দিনের মধ্যে রংয়ের কাজ শেষ করে মন্ডপ কমিটির কাছে হস্তান্তর করতে পারবো। 

ভবেন্দ্রনাথ পাল জানান, আমরা দ্রুত গতিতে কাজ করতেছি। বরিশালে ১টি ও ঝালকাঠির ১৩টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরী করতেছি। অনেকে অল্প বরাদ্দেও প্রতিমা তৈরীর নির্দেশনা দিয়ে থাকেন যারা বাসা-বাড়িতে উৎসব করে থাকেন। তাদের জন্য বাড়িতে বসে প্রতিমা তৈরী করে দেয়া হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয়, দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেয়া যায়। 

শিল্পী মিলন পাল জানান, এপেশায় যে পরিশ্রম সে অনুযায়ী উপার্জন হয় না। তাই ভাই ব্রাদারেরা এ পেশায় কাজ করতে চায় না, অন্য পেশায় চলে গেছে। করোনা ভাইরাস আসায় পুজা-পার্বন কম হয়। প্রতিমার দাম ও খরচ যা হয় তা আমরা পাই না। 

কারিগর সৈকত দাশ বলেন, একাজে যে সব সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়, সব কিছুরই দাম আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি। দোকানদারদের কাছে গেলে তারা বলেন, রং সহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি বাহির থেকে আনতে হয়। মালামাল আনতে না পারায় দাম ও খরচ বেশি পড়ে। তাই তাদের কাছ থেকে বেশি মূল্যে উপাদানসমূহ কিনতে হচ্ছে। 

ঝালকাঠি জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর তরুন কর্মকার জানান, কয়েক সপ্তাহ পরেই শুরু হবে শারদীয় দুর্গা পুজা। এবছর ঝালকাঠি জেলায় ১৬৯টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ করছে কারিগররা। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিমা তৈরীর কাজ আর কিছুদিন পরেই শিল্পীর রং তুলির ছোয়ায় দৃষ্টি নন্দন হবে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে মন্ডপ পাহাড়া দেয়া শুরু হয়েছে। 

তিনি আরো জানান, আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য,  শিল্পমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ১৪দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি মহোদয় জেলার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন।
BBS cable ad