হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের বিস্ফোরক মামলায় জামিন মঞ্জুর
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন। রোববার ( ১৯ জানুয়ারি) আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর বোরহান উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বাসসকে বলেন, আসামিপক্ষ যে দরখাস্ত দিয়েছে, তাতে তারা ঠিক বলতে পারেনি যে, কতজনের জামিনের জন্য দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে কতজন খালাস পেয়েছে, তা নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। তারা একবার বলে ১৬৯ জন, আবার বলে দুই শতাধিক।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর বলেন, এরই মধ্যে নিম্ন আদালত থেকে খালাস পেয়েছে এমন ত্রিশজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। সেখান থেকে ১৫ জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছে। খালাস প্রাপ্ত ১৫ জনকে ছাড়া বাকিদের সংখ্যা বলতে পারেনি আসামিপক্ষ। বোরহান উদ্দিন বলেন, বলতে না পারায় আদালতের কাছে বিষয়টি সুস্পষ্ট না হওয়ায় আদালত কন্ডিশন দিয়েছেন যে, যারা নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত ও আপিল আদালত থেকে খালাসপ্রাপ্ত তারাই জামিন পাবেন। তবে এর সংখ্যা দুই শতাধিক অতিক্রম করবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজও শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহিদ পরিবারের সদস্যরা। এ হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেধে দিয়েছে সরকার।