স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার প্রতিবাদ করায় যাত্রীদের মারধর; শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো বাস শ্রমিকরা
বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় যাত্রীর সাথে স্ট্যান্ডে কথা কাটাকাটি হওয়ায় একই পরিবারের সবাইকে মারধর করেছে বাস শ্রমিকরা। এমনকি ঐ পরিবারের সঙ্গে থাকা শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয় শ্রমিকরা। । এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির বাস শ্রমিকরা। বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে শুক্রবার (২৮ মে) সকাল ৮টার দিকে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির মুহিন ফয়সাল পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে মারধর করা হয়।
জানা গেছে , রূপাতলী বাস টার্মিনালের একাধিক যাত্রী জানান অভ্যন্তরীণ সকল রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরিবহন করছে। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়।
এদিকে মারধরের শিকার মঠবাড়িয়ার শামীম সিকদার জানান তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে বৌ কারিমা ও কারিমার ৭ বছরের শিশু কন্যা মুনিয়াকে নিয়ে মঠবাড়িয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেছিলেন। তিনি বলেন সাধারণ সময়ে বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়া ভাড়া দেড়শ টাকা করে। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। শিশুসহ আমরা চারজনেই ২৪০ টাকা করে টিকেট নিয়ে সিটে বসেছি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সিট খালি না রেখে বাসের সুপারভাইজার অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় সিট পরিপূর্ণ করে আমাদেরকে দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়। এতে ঠাসাঠাসি হওয়ায় আমি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপার সহ স্ট্যান্ডের ১৫/২০ জন শ্রমিক মিলে আমাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার মা, ভাগ্নে বৌ বাঁচাতে আসলে তাদেরকেও মারধর করে এবং শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তাদের চারজনকে না নিয়েই ঠাসাঠাসি করা যাত্রী নিয়ে মুহিন ফয়সাল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-২৪৪৯৯৮) বাসটি মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানার এসআই রেজাউল ইসলাম জানান, ট্রাফিক পুলিশ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে দুপুরে শামীম সিকদার থানায় এ মর্মে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। কোতয়ালী মডেল থানার ওসি নূরুল ইসলাম জানান, অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল কারোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।