South east bank ad

নারী নীতির অন্যতম রূপকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

 প্রকাশ: ২৩ অগাস্ট ২০২১, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন   |   স্পিকার

নারী নীতির অন্যতম রূপকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

বিশেষ প্রতিবেদক
 
টানা তৃতীয়বারের মতো জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। নবম জাতীয় সংসদের স্পিকারসহ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ৩০ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে নির্বাচিত হন। ৪৬ বছর বয়সে তিনি সর্বকনিষ্ঠ স্পিকাররূপে সাবেক স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হন। এরপূর্বে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দশম জাতীয় সংসদের পর একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বর্তমান সরকারের নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন সরকারের প্রস্তাবিত নারী নীতিরও অন্যতম প্রধান রূপকার। তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায়ই ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১১’ সংসদে পাস হয়।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পারিবারিক একটি রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তার বাবা অত্যন্ত দুঃসময়ে অর্থাৎ আইয়ুব খানের মার্শাল ল’র সময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীকালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। আইনজীবী হিসেবে তিনি যখন কাজ করেছেন তিনি তখন সফলতার সঙ্গে কাজ করেছেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার আইনজীবী প্যানেলের একজন সদস্য ছিলেন তিনি।

শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৬৬ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। নোয়াখালী জেলার চাটখিলের সিএসপি অফিসার ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব রফিকুল্লাহ চৌধুরীর কন্যা তিনি। আর মা ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য প্রফেসর নাইয়ার সুলতানা। তার নানা ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি সিকান্দার আলী। তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানীর পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। তাদের সংসারে এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে।

শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৮৩ সালে ঢাকা বোর্ডে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৮৫ সালে এইচএসসি-তে একই বোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও ১৯৯০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম-এ ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হন। শিরীন শারমিন চৌধুরী একজন কমনওয়েলথ স্কলার। ২০০০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পিএইচডি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলো সংবিধানিক আইন ও মানবাধিকার।
এলএলএম পাশ করার পর তিনি ১৯৯২ সালেই বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে তার ১৫ বছর এডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সেইসাথে সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন। তিনি আমকি মহিলা আলিম মাদরাসাকে এমপিওভুক্ত করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন এবং এই নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। যার ফলে উক্ত এলাকার হাজার হাজার মেয়ে শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত এই মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা অর্জন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
নারীদের উন্নয়নে দীর্ঘদিন কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘ডব্লিউআইসিসিআই অ্যাওয়ার্ড ২০২১ ফর উইমেন অব দ্য ডিকেড ইন পাবলিক লাইফ অ্যান্ড লিডারশিপ’ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেও তিনি এক মুহুর্তের জন্য ভুলে যাননি তার নির্বাচনি আসন রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) এর জনগণদের। রংপুর-৬ আসন বাসীর সেবায় তিনি সর্বদা নিয়জিত থাকেন। দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই একাধিক প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। অসহায়দের সহায়তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সুরক্ষা ও জনহিতকর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। জনপ্রতিনিধিদের রোলমডেল হিসেবে সারাদেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
BBS cable ad

স্পিকার এর আরও খবর: