ভিডিও দেখে আরো একজনকে গ্রেফতারের পর যা জানালো পুলিশ
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রাজিব ভট্টাচার্য্য নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে নগর ডিবি পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সময়কার একটি ভিডিওচিত্রে তার উপস্থিতি ধরা পড়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজিব ভট্টাচার্য্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রাজিব ফটিকছড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রামের সুনীল ভট্টাচার্য্যের ছেলে। বর্তমানে থাকেন নগরের কোতোয়ালি থানার বান্ডেল রোড এলাকায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের এডিসি (জনসংযোগ) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজিবের বিরুদ্ধে অস্ত্র-মাদকসহ নানা অপরাধে নগরের বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি একাধিকবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আইনজীবী আলিফ হত্যার সময়কার একটি ছবিতেও রাজিবের উপস্থিতি দেখা গেছে। ঐ ছবিতে দেশীয় অস্ত্র এবং বটি হাতে কয়েকজন যুবকের পেছনে একটি ইটের টুকরো হাতে দেখা যায় তাকে।
এডিসি তারেক আজিজ বলেন, রাজিবের বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফ হত্যায় অংশ নেয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এর আগে, এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিল নগর পুলিশ। ঘটনার দিন মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকা থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়।
এদিকে, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো প্রায় ১৪০০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে পুলিশ। তবে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা করেনি তার পরিবার।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আদালত এলাকায় ইসকন সমর্থকদের হামলায় নিহত হন তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। তিনি ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন পান। সম্প্রতি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান।
একইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এ সময় ইসকন সমর্থকরা প্রিজন ভ্যানটি আড়াই ঘণ্টা আদালত চত্বরে আটকে রাখেন। পরে আদালতের কেন্দ্রীয় মসজিদে হামলা এবং আইনজীবী ও সাংবাদিকদের প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
তাদের হামলায় আহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফসহ কয়েকজন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।