প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কে আনতে হবে: মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কে নিয়ে আসতে হবে। একটি শূন্যতা আমাদের রয়ে গেছে। আমরা এখন পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে এক দেশ এক রেট চালু করতে পারিনি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের জন্য আমাদের যেটুকু ঘাটতি রয়েছে সেটুকু আমরা পূরণ করব। আমাদের দায়িত্ব হলো প্রতিটি মানুষকে একটি ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কের মধ্যে নিয়ে আসা। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের যা যা করা দরকার আমরা করছি, করব এবং করতে থাকব।
বুধবার (১৭ মে) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন, সল্পোন্নত দেশ সমুহের ক্ষমতায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসময় তিনি একটি স্মারক ডাক টিকিটও উন্মোচন করেন।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণ, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠন ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারে গৃহীত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন। ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের বঙ্গবন্ধু বপন করা বীজ অঙ্কুরিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে চারা গাছে পরিণত হয়। ২০০৮ সালে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনীতিক শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে গত ১৪ বছরের বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুল আলম। অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যানে শ্যাম সুন্দর সিকদার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কানেক্টিভিটি নিশ্চিতে ১০টি সুপারিশ তুলে ধরেন।
বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি খাত ও একাডেমিয়া একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা দুর্বল অবস্থানে রয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হচ্ছে না। গতানুগতিক শিক্ষা দিয়ে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি হবে না। ২০৪১ সালে ৩ টি অর্জন হবে বাংলাদেশের। স্মার্ট বাংলাদেশ, ধনী বাংলাদেশ, বিশ্বে আইটি সেক্টরে নেতৃস্থানীয়। স্মার্ট সিটিজেন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ কখনোই হবে না। শিক্ষায় আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।এখন ক্লাসরুমের প্রযুক্তি ব্যবহেরের মাধ্যমে শিক্ষক বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে পারছে। কাজেই শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের বাড়াতে হবে। না হয় আমরা পিছিয়ে যাবো। আগামীর বিশ্বে বিগ ডাটা এবং ব্লকচেইন ছাড়া টিকে থাকা অসম্ভব তাই আমাদের এখনই এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, টেলিকম সেক্টরে ১০ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়ালে জিডিপি ২ শতাংশ বাড়বে। কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করার জন্য পৃথিবীর উন্নত প্রযুক্তি দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। ডিজিটাল ডিভাইড দূর করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি সহজ লভ্য করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ সমূহের ক্ষমতায়নে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির বিকল্প নাই।