South east bank ad

পিইসিই থাকছে না, তবু প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড

 প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন   |   দেশ

পিইসিই থাকছে না, তবু প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড
বিডিএফএন লাইভ.কম

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষা নেই। এমনকি সম্প্রতি চূড়ান্ত হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাতেও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেটের (জেএসসি) মতো পরীক্ষা রাখা হয়নি। পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে দশম শ্রেণিতে গিয়ে। এছাড়া শিশুদের চাপমুক্ত রাখতে এবং গাইড-কোচিং থেকে দূরে রাখতে পিইসি পরীক্ষা বাদ দেওয়ার পক্ষে শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরাও। কিন্তু এসব বিষয় উপেক্ষা করেই প্রাথমিক স্তরের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার জন্য ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন’ করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জনমত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল নিজেদের ওয়েবসাইটে এই আইনের খসড়া প্রকাশ করে। অনেকেই বলছেন, পিইসি পরীক্ষাই যদি না থাকে, তা হলে এই বোর্ড করার কোনো মানে হয় না।

২০০৯ সালে পিইসি পরীক্ষা শুরু হয়। মাদরাসার সমমানের শিক্ষার্থীদের জন্য পরের বছর চালু হয় ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে এই পরীক্ষা হয়। মহামারীর কারণে গত বছর এ পরীক্ষা হয়নি; এ বছরও হবে না।

শিক্ষাবিদরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, পিইসি-জেএসসির কারণে শিক্ষার্থীরা মুখস্থবিদ্যা, গাইড ও কোচিংয়ে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পিইসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দেশের ৮৬ শতাংশের বেশি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে হয়। আবার ৭৮ শতাংশ সরকারি বিদ্যালয়ে কোচিং করা ছিল বাধ্যতামূলক।

জাতীয় শিক্ষানীতিতেও পঞ্চম শ্রেণিতে জাতীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা নেই। এখন প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড করার মাধ্যমে পিইসি পরীক্ষাকে আরও দীর্ঘমেয়াদে রাখার পরিকল্পনাই প্রকাশ পাচ্ছে।

খসড়া আইনে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের মোট ১৯টি কার‌্যাবলির কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মৌলিক যেসব কাজের কথা বলা হয়েছে, তার সবই পিইসি পরীক্ষা সংক্রান্ত।

এই বোর্ডের উপযোগিতা সম্পর্কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘যেহেতু পরীক্ষা হচ্ছে, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হয়, যা বোর্ডের কাজ, সে জন্য বোর্ড করার চিন্তা। এখন তার সুফল-কুফল নিয়ে লেখালেখি হলে জাতি যদি না চায়, তখন তা পরিবর্তনও হতে পারে।’

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বোর্ড করে পিইসি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও জাতীয় শিক্ষাক্রম, উন্নয়ন, পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এম তারিক আহসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার বোঝা কমাতে চান। তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা না রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাতেও পিইসির মতো কোনো পরীক্ষা রাখার কথা বলা হয়নি। সেখানে বোর্ড করে এই পরীক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার অর্থ হলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করা। নতুন শিক্ষাক্রমের দর্শনের বিরোধী পদক্ষেপ নেওয়া। এই পরীক্ষা স্থায়ী হলে কোচিং, প্রাইভেট ও নোট-গাইডের ব্যবসা আরও রমরমা হবে। বাড়বে মুখস্থনির্ভরতা লেখাপড়া।’
BBS cable ad