শিরোনাম

South east bank ad

র‍্যাব সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য, সেই এসপিকে শাস্তি দিল সরকার

 প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ১১:২১ অপরাহ্ন   |   বিচার বিভাগ

র‍্যাব সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য, সেই এসপিকে শাস্তি দিল সরকার
র‌্যাবে কর্মরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও স্পর্শকাতর ফোনালাপ প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হককে শাস্তি দিয়েছে সরকার। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ভঙ্গ করায় তাকে তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২৫ মে পুলিশ র‌্যাব-৫ এ কর্মরত পুলিশ সুপার (এসপি) ফজলুল হককে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দপ্তরে রাখা হয়। একই অপরাধে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. নাজমুল হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। অপরাধ স্বীকার করায় তাকে লগুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর শারদায় বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাকাডেমিতে কর্মরত।

২০২১ সালের ১৬ মে প্রথমবারের মতো একযোগে ৪৮ পুলিশ সুপারকে উপপরিচালক পদে র‌্যাবের পদায়ন করা হয়। পুলিশ সুপারদের পদায়নের ঘটনায় র‌্যাবে কর্মরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও র‌্যাব নিয়ে মোবাইল ফোনে বিরূপ মন্তব্য করেন পুলিশের দুইজন কর্মকর্তা। তাদের একজন ছিলেন- তৎকালীন রাজশাহী র‍্যাব-৫ ব্যাটালিয়নে কর্মরত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এস এম ফজলুল হক; অপরজন- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হাসান। এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে যা বলা হয়েছে:

রবিবারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাজশাহী র‍্যাব-৫-এ কর্মরত থাকাকালে পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হক রাজশাহী মহানগর পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও স্পর্শকাতর ফোনালাপ করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফোনালাপের মাধ্যমে আন্তঃবাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করাসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার আগে কারণ দর্শানো হয়।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফজলুল হক লিখিত জবাব দাখিলের আগে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন।

তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ মে ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিকালে আনা অভিযোগ, উভয় পক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত কর্মকর্তার জবাব এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণাদি পর্যালোচনায় ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুত্ব ও প্রকৃতি বিবেচনায় এবং অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড আরোপ হতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। একই বছরের ৩ জুলাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৭(২)(ঘ) বিধি অনুযায়ী অতিরিক্ত ডিআইজি আতিকুর রহমানকে বিভাগীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান সরেজমিন তদন্ত শেষে গত নভেম্বরে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে মতামত দেন। এসপি ফজলুল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ, লিখিত জবাব, শুনানিকালে বক্তব্য, তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল পর্যালোচনা করে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি-৪(৩)-এর উপ-বিধি (১)(ঘ) মোতাবেক চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো উপযুক্ত গুরুদণ্ড কেন প্রদান করা হবে না, এ মর্মে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফা কারণ দর্শানো হয়। তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ সুপার ফজলুল হক-এর বিরুদ্ধে হওয়া বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক 'অসদাচারণ'-এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী আগামী তিনবছরের জন্য ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড প্রদানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

তাই ফজলুল হককে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) এর উপ-বিধি (১)(ক) অনুসারে আগামী তিনবছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড দেওয়া হলো।

জনস্বার্থে জারীকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

BBS cable ad

বিচার বিভাগ এর আরও খবর: