দক্ষিণ সিটিতে জন্মনিবন্ধনে অনিয়মের সত্যতা পেল দুদক
বিডিএফএন লাইভ.কম
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে জন্মনিবন্ধন ও সংশোধনের জন্য সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ ঘুষ হিসেবে লেনদেনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
আঞ্চলিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট অভিযান চালিয়ে এসব অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৩ মার্চ) সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালায়। অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তার কার্যালয় ১ ও ৪-এ জন্মনিবন্ধন ও সংশোধনে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ ঘুষ হিসেবে আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ অভিযান চালিয়েছে।
সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করেছে টিম। তাৎক্ষণিক বিষয়গুলো সমাধানের জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদক জানায়, এনফোর্সমেন্ট টিম প্রথমে ছদ্মবেশে আঞ্চলিক কর্মকর্তার কার্যালয়-১ ও আঞ্চলিক কর্মকর্তার কার্যালয়-৪ পরিদর্শন করে।
পরে ঢাকার আনন্দ বাজারের কম্পিউটার দোকান ও ঢাকার গুলিস্তানের কম্পিউটারের দোকানে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন ও সংশোধনের জন্য কি কি তথ্য প্রয়োজন তা জানতে এবং ছদ্মবেশে দালাল চিহ্নিত করার চেষ্টা করে।
দুদক টিম দক্ষিণ সিটির আঞ্চলিক কর্মকর্তার কার্যালয়-৪ পরিদর্শন করে দেখতে পায় কক্ষটি তালাবদ্ধ রয়েছে। পরে কার্যালয়-১ পরিদর্শন করে দেখতে পায় আঞ্চলিক কর্মকর্তা ছুটিতে রয়েছেন। মোবাইল ফোনে তাকে অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হয়।
তিনি অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। তার অনুমতিক্রমে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে জন্মনিবন্ধন ও সংশোধনের বিষয়ে তথ্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি রেজিস্ট্রেশন সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিনের নিকট নিয়ে যান।
গিয়াস উদ্দিনের কাছে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু কপি টু কপি ও জন্মনিবন্ধন-সংশোধনের আবেদন গ্রহণ সংক্রান্ত রেজিস্ট্রার চাওয়া হলে তিনি দুদক টিমকে জানান, এ সংক্রান্ত কোনো রেজিস্ট্রার নেই। তবে ইস্যু করা হলে তা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হয়।
জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু কপি টু কপি ও জন্ম-নিবন্ধন সংশোধনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কতগুলো আবেদন জমা পড়ে, আবেদন নিষ্পত্তি হতে কত দিন সময় প্রয়োজন- এ সংক্রান্ত গ্রহণ অথবা রিসিভ রেজিস্ট্রার না থাকায় জন্মনিবন্ধনের কার্যক্রমের অস্বচ্ছতার প্রমাণ মিলেছে।
গত ৬ মাসের জন্মনিবন্ধনের রেকর্ড পরীক্ষা করেছে দুদকের টিম। রিসিভ অথবা গ্রহণ রেজিস্ট্রার মেইনটেইন না করায় নির্ধারিত ফি সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে কীভাবে আদায় করা হতো, সে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর মেলেনি। অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছে দুদক।